পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (নবম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৭৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শেষ সপ্তক আজ দেখো ওদের যেমন- তেমন খেলা, । শোনো ওদের যখন-তখন কলকাবনি, তাই নিয়ে খুশি থাকো ।” বন্ধু বললে,

  • Gran CN023. Yk3 ভরা পেয়ালার তৃষ্ণা নিয়ে ।

তুমি খ্যাপার মতো বললে, আজকের মতো ভেঙে ফেলেছি ছন্দের সেই পুরোনো পেয়ালখানা । আতিথ্যের ক্রটি ঘটাও কেন ?” আমি বলি, “চলো-না করেন।াতলায়, ধারা সেখানে ছুটছে আপনি খেয়ালে, কোথাও মোটা, কোথাও সরু । কোথাও পড়ছে শিখর থেকে শিখরে, কোথাও লুকোল গুহার মধ্যে । তার মাঝে মাঝে মোটা পাথর পথ ঠেকিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে বর্বরের মতো, মাঝে মাঝে গাছের শিকড় কঙালের মতো ছড়িয়েছে আঙুলগুলো— কাকে ধরতে চায় ওই জলের বিকিমিকির মধ্যে ?” সভার লোকে বললে, “এ যে তোমার আবাধা বেণীর বাণী, বন্দিনী সে গেল কোথায় ?” আমি বলি, “তাকে তুমি পারবে না। আজ চিনতে, তার সাতনলী হারে আজ কলক নেই, চমক দিচ্ছে না চুনি-বিসানো কঙ্কণে ।” ওরা বললে, “তবে মিছে কেন ? কী পাবে ওর কাছ থেকে ?” আমি বলি, যা পাওয়া যায় গাছের ফুলে ডালে পালায় সব মিলিয়ে । পাতার ভিতর থেকে তার রঙ দেখা যায়। এখানে সেখানে, গন্ধ পাওয়া যায় হাওয়ার কাপটায় । চার দিকের খোলা বাতাসে '। দেয় একটুখানি নেশা লাগিয়ে । মুঠোয় করে ধরবার জন্যে সে নয়, তার অসাজানো আটপহুরে পরিচয়কে অনাসক্ত হয়ে মানবার জন্যে তার আপনি স্থানে ৷”