পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (নবম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৮৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শেষ সপ্তক সাতাশ আমার এই ছোটো কলসিটা পেতে রাখি ঝরনাধারার নীচে । বসে থাকি কোমরে আঁচল বেঁধে, সারা সকালবেলা, শেওলা-ঢাকা পিছল পাথরটাতে পা বুলিয়ে । এক নিমেষেই ঘট যায় ভরে তার পরে কেবলই তার কানা ছাপিয়ে ওঠে, জল পড়তে থাকে ফেনিয়ে ফেনিয়ে বিনা কাজে বিনা তত্ত্বরায়ওই যে সূর্যের আলোয় উপচে-পড়া জলের চলে ছুটির খেলা, আমার খেলা ওই সঙ্গেই ছলকে ওঠে। মনের ভিতর থেকে । সবুজ বনের মিনে করা উপত্যকার নীল আকাশের পেয়ালা, তারই পাহাড়ী-ঘেরা কানা ছাপিয়ে পড়ছে ঝরঝরানির শব্দ । ভোরের ঘুমে তার ডাক শুনতে পায় গায়ের মেয়েরা । জলের ববনি বেগনি রঙের বনের সীমানা যায়। পেরিয়ে, নেমে যায় যেখানে ওই বুনোেপাড়ার মানুষ হাট করতে আসে, তরাই গ্রামের রাস্তা ছেড়ে বাকে বাকে উঠতে থাকে। চড়াই পথ বেয়ে, তার বলদের গলায় রুমুঝুনুঘণ্টা বাজে, তার বলদের পিঠে শুকনো কাঠের আঁটি বোঝাই করা । এমনি করে প্ৰথম প্রহর গেল কেটে । রাঙা ছিল সকালবেলাকার নতুন রৌদ্রেীয় রঙ, উঠিল সাদা হয়ে । বক উড়ে চলেছে পাহাড় পেরিয়ে জলার দিকে, ዓ ዓ