পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (নবম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৮৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শেষ সপ্তক পণ্ডিত তোমাকে বলে শুক্রগ্রহ ; বলে, আপনি সুদীর্ঘকক্ষে তুমি বৃহৎ, তুমি বেগবান, তুমি মহিমান্বিত ; সূৰ্যর্বন্দনার প্রদক্ষিণপথে তুমি পৃথিবীর সহযাত্রী, রবিরশ্মিগ্রথিত দিনরত্বের মালা দুলছে তোমার কষ্ঠে । যে মহাযুগের বিপুল ক্ষেত্রে তোমার নিগুঢ় জগদব্যাপার সেখানে তুমি স্বতন্ত্র, সেখানে সুদূর, সেখানে লক্ষকোটিবৎসর আপনার জনহীন রহস্যে তুমি অবগুষ্ঠিত । আজ আসন্ন রজনীর প্রান্তে কবিচিত্তে যখন জাগিয়ে তুলেছ নিঃশব্দ শান্তিবাণী সেই মুহুর্তেই আমাদের অজ্ঞাত ঋতুপর্যায়ের আবর্তন তোমার জলে স্থলে বাষ্পপমণ্ডলীতে রচনা করছে সৃষ্টিবৈচিত্ৰ্য । তোমার সেই একেশ্বর যজ্ঞে আমাদের নিমন্ত্রণ নেই, আমাদের প্রবেশদ্বার রুদ্ধ । হে পণ্ডিতের গ্ৰহ, তুমি জ্যোতিষের সত্য 6न कथों मानव, সে সত্যের প্রমাণ আছে গণিতে । কিন্তু এও সত্য, তার চেয়েও সত্য যেখানে তুমি আমাদেরই আপন শুকতারা, সন্ধাতারা, যেখানে তুমি ছোটাে, তুমি সুন্দর, যেখানে আমাদের হেমন্তের শিশিরবিন্দুর সঙ্গে তোমার তুলনা, যেখানে শরতের শিউলি ফুলের উপমা তুমি প্ৰভাতে মানব-পথিককে জীবনযাত্রার পথের মুখে, সন্ধ্যায় ফিরে ডেকেছি চরম বিশ্রামে । Պֆ