পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (পঞ্চদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১২৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Σ Σ Ψ) রবীন্দ্র-রচনাবলী মৃত্তিকার হে বীর সন্তান, সংগ্রাম ঘোষিলে তুমি মৃত্তিকারে দিতে মুক্তিদান মরুর দারুণ দুর্গ হতে ; যুদ্ধ চলে ফিরে ফিরে ; সন্তরি সমুদ্র-উর্মি দুর্গম দ্বীপের শূন্য তীরে শু্যামলের সিংহাসন প্রতিষ্ঠিলে অদম্য নিষ্ঠায়, দুস্তর শৈলের বক্ষে প্রস্তরের পৃষ্ঠায় পৃষ্ঠায় বিজয়-আখ্যানলিপি লিখি দিলে পল্লব-অক্ষরে ধূলিরে করিয়া মুগ্ধ, চিহ্নহীন প্রাস্তরে প্রাস্তরে ব্যাপিলে আপন পন্থা । বাণীশূন্য ছিল একদিন জলস্থল শূন্যতল, ঋতুর উৎসবমন্ত্রহীন,— শাখায় রচিলে তব সংগীতের আদিম আশ্রয়, ষে-গানে চঞ্চল বায়ু নিজের লভিল পরিচয়, স্বরের বিচিত্র বর্ণে আপনার দৃশ্বহীন তনু রঞ্জিত করিয়া নিল, অঙ্কিল গানের ইন্দ্ৰধনু উত্তরীর প্রান্তে প্রাস্তে। সুন্দরের প্রাণমূর্তিথানি মৃত্তিকার মর্ত্যপটে দিলে তুমি প্রথম বাখানি টানিয়া আপন প্রাণে রূপশক্তি সূর্যলোক হতে, আলোকের গুপ্তধন বর্ণে বর্ণে বর্ণিলে আলোতে । ইন্দ্রের অপসরী আসি মেঘে মেঘে হানিয়া কঙ্কণ বাস্পপাত্র চুর্ণ করি লীলামৃত্যে করেছে বর্ষণ যৌবন-অমৃতরস, তুমি তাই নিলে ভরি ভরি আপনার পত্রপুষ্পপুটে, অনন্তযৌবনা করি সাজাইলে বসুন্ধরা । হে নিস্তব্ধ, হে মহাগম্ভীর, বীর্ষেরে বাধিয়া ধৈর্যে শান্তিরূপ দেখালে শক্তির ; তাই আসি তোমার আশ্রয়ে শাস্তিদীক্ষা লভিবারে শুনিতে মৌনের মহাবাণী ;– দুশ্চিস্তার গুরুভারে ।