পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (পঞ্চদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১৩৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১২৬ স্বচ্ছ নীলাম্বরসম নির্মল তোমার কণ্ঠধ্বনি । যেন ইতিহাসজালে বাধা নহ দেশে কালে, যেন তুমি দৈববাণী বিচিত্র বিশ্বের মাঝখানে, পরিচয়হীন তব আবির্ভাব, কেন এ কে জানে ‘কেন এ কে জানে— এই মন্ত্র আজি মোর মনে জাগে ; তাই তো ছন্দের মালা গাথি অকারণ অকুরাগে । বসন্তের নানা ফুলে গন্ধ তরঙ্গিয়া তুলে, আম্রবনে ছায়া কাপে মৌমাছির গুঞ্জরণগানে ; মেলে অপরূপ ডানা প্রজাপতি, কেন এ কে জানে । কেন এ কে জানে এত বর্ণগন্ধরসের উল্লাস, প্রাণের মহিমাছবি রূপের গৌরবে পরকাশ । যেদিন বিতানচ্ছায়ে মধ্যাহ্নের মন্দবায়ে ময়ুর আশ্রয় নিল, তোমারে তাহারে একখানে দেখিলাম চেয়ে চেয়ে, কহিলাম, কেন এ কে জানে? অভ্যাসের সীমা-টানা চৈতন্তের সংকীর্ণ সংকোচে ঔদাস্তের ধুলা ওড়ে, আঁখির বিস্ময়রস ঘোচে । মন জড়তায় ঠেকে, নিখিলেরে জীর্ণ দেখে, হেনকালে হে নবীন, তুমি এসে কী বলিলে কানে ; বিশ্বপানে চাহিলাম, কহিলাম, কেন এ কে জানে ।