পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (পঞ্চদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১৩৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বনবাণী S२१ আমি আজ কোথা আছি, প্রবাসে অতিথিশালা মাঝে । তব নীললাবণ্যের বংশীধ্বনি দূর শূন্যে বাজে। আসে বৎসরের শেষ, চৈত্র ধরে স্নান বেশ, হয়তো বা রিক্ত তুমি ফুল ফোটাবার অবসানে, তৰু, হে অপুর্ব রূপ, দেখা দিলে কেন যে কে জানে । ১৭ চৈত্র ১৩৩৩ ভরতপুর কুরচি অনেককাল পুর্বে শিলাইদহ থেকে কলকাতায় আসছিলেম। কুষ্টিয়া স্টেশনঘরের পিছনের দেয়ালঘেঁষা এক কুরচিগাছ চোখে পড়ল। সমস্ত গাছটি ফুলের ঐশ্বর্ষে মহিমান্বিত । চারিদিকে হাটবাজার ; একদিকে রেলের লাইন, অন্যদিকে গোরুর গাড়ির ভিড়, বাতাস ধুলোয় নিবিড়। এমন অজায়গায় পি. ডব্লু. ডি-র স্বরচিত প্রাচীরের গায়ে ঠেস দিয়ে এই একটি কুরচিগাছ তার সমস্ত শক্তিতে বসন্তের জয়ঘোষণা করছে— উপেক্ষিত বসন্তের প্রতি তার অভিবাদন সমস্ত হট্টগোলের উপরে যাতে ছাড়িয়ে ওঠে এই যেন তার প্রাণপণ চেষ্টা । কুরচির সঙ্গে এই আমার প্রথম পরিচয় । ভ্রমর একদা ছিল পদ্মবনপ্রিয় ছিল প্রতি কুমুদিনী পানে । সহসা বিদেশে আসি হায়, আজ কি ও কুটজেও বহু বলি? মানে ! —সংস্কৃত উদ্ভট শ্লোকের অনুবাদ কুরচি, তোমার লাগি পদ্মেরে তুলেছে অন্যমন ষে-ভ্রমর, শুনি নাকি তারে কবি করেছে ভর্ৎসনা । আমি সেই ভ্রমরের দলে। তুমি আভিজাত্যহীনা, নামের গৌরবহার ; শ্বেতভুজা ভারতীর বীণা