পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (পঞ্চদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১৯৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১৮ e রবীন্দ্র-রচনাবলী তেমনি আবার বালকদিনের মতো চোখ মেলে মোর স্থদুর-পানে বিনা কাজে প্রহর হল গত। প্রখর তাপের কাল, ঝরঝরিয়ে কেঁপে ওঠে শিরীষগাছের ডাল ; কুয়োর ধারে তেঁতুলতলায় ঢুকে পাড়ার কুকুর ঘুমিয়ে পড়ে ভিজে মাটির স্নিগ্ধ পরশস্থখে ; গাড়ির গোরু ক্ষণকালের মুক্তি পেয়ে ক্লাস্ত আছে শুয়ে জামের ছায়ায় তৃণবিহীন ভূয়ে । কাকর-পথের পারে শুকনো পাতার দৈন্ত জমে গন্ধরাজের সারে। চেয়ে আছি দু-চোখ দিয়ে সব-কিছুরে ছুয়ে, ভাবনা আমার সবার মাঝে খুয়ে । বালক যেমন নগ্ন-আবরণ, তেমনি আমার মন ঐ কাননের সবুজ ছায়ায় এই আকাশের নীলে বিনা বাধায় এক হয়ে যায় মিলে । সকল জানার মাঝে চিরকালের না-জানা কার শঙ্খধ্বনি বাজে । এই ধরণীর সকল সীমায় সীমাহারার গোপন আনাগোনা সেই আমারে করেছে আনমনা । ২১ বৈশাখ ১৩৩৮ [ শাস্তিনিকেতন ] বর্ষশেষ যাত্রা হয়ে আসে সারা,— আয়ুর পশ্চিমপথশেষে ঘনায় মৃত্যুর ছায়া এসে । অস্তস্বর্য আপনার দাক্ষিণ্যের শেষ বন্ধ টুটি ছড়ায় ঐশ্বৰ্ষ তার ভরি দুই মুঠি ।