পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (পঞ্চদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩৭০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

○○や রবীন্দ্র-রচনাবলী ফাগুলাল। দেখ নি ওদের মদের ভাড়ার, অস্ত্রশালা আর মন্দির একেবারে গায়ে গায়ে ? 를 চন্দ্রা। তা ছুটি পেয়েছ বলেই মদ ? গায়ে থাকতে পার্বণের ছুটিতে তো— ফাগুলাল। বনের মধ্যে পাখি ছুটি পেলে উড়তে পায়, খাচার মধ্যে তাকে ছুটি দিলে মাথা ঠুকে মরে। যক্ষপুরে কাজের চেয়ে ছুটি বিষম বালাই। চন্দ্রা । কাজ ছেড়ে দাও-না, চলো-না ঘরে ফিরে। ফাগুলাল। ঘরের রাস্ত বন্ধ, জান না বুঝি ? চন্দ্রা । কেন বন্ধ । ফাগুলাল। আমাদের ঘর নিয়ে ওদের কোনো মুনফা নেই। চন্দ্রা । আমরা কি ওদের দরকারের গায়ে আঁট ক’রে লাগানো, যেন ধানের গায়ে তুষ ? ফালতো কিছুই নেই ? ফাগুলাল। আমাদের বিশুপাগল বলে, আস্ত হয়ে থাকাটা কেবল পাঠার নিজের পক্ষেই দরকার ; যারা তাকে খায়, তার হাড়গোড় খুরলেজ বাদ দিয়েই খায়। এমনকি, হাড়কাঠের সামনে তারা যে ভঁ্যা করে ডাকে, সেটাকেও বাহুল্য বলে আপত্তি করে। ওই-যে বিশুপাগল গান গাইতে গাইতে আসছে। চন্দ্রা। কিছুদিন থেকে হঠাৎ ওর গান খুলে গেছে। ফাগুলাল । তাই তো দেখছি । চন্দ্র। ওকে নন্দিনীতে পেয়েছে, সে ওর প্রাণ টেনেছে, গানও টেনেছে। ফাগুলাল । তাতে আর আশ্চর্যটা কী । p চন্দ্রা। না, আশ্চর্য কিছুই নেই। ওগো সাবধান থেকে, কোন দিন তোমারও গলা থেকে গান বের করবে— সেদিন পাড়ার লোকের কী দশা হবে । মায়াবিনী মায়া জানে। বিপদ ঘটাবে। ফাগুলাল। বিশুর বিপদ আজ ঘটে নি, এখানে আসবার অনেক আগে থাকতেই ও নন্দিনীকে জানে। চন্দ্রা । বিশুবেয়াই, শুনে যাও, শুনে যাও। যাও কোথায় । গান শোনাবার লোক এখানেও এক-আধজন মিলতে পারে, নিতান্ত লোকসান হবে না। বিশুর প্রবেশ ও গান মোর স্বপনতরীর কে তুই নেয়ে। লাগল পালে নেশার হাওয়া,