পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (পঞ্চদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩৮০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

\©&J द्भदौटल-ब्रछनांदळी এল আঁধার ঘিরে, পাখি এল নীড়ে, তরী এল তীরে, শুধু আমার হিয়া বিরাম পায় নাকো, ওগো দুখজাগানিয়া। নন্দিনী । বিশুপাগল, তুমি আমাকে বলছ 'দুখজাগানিয়া’ ? বিশু। তুমি আমার সমুদ্রের অগম পারের দূতী ৷ যেদিন এলে যক্ষপুরীতে, আমার হৃদয়ে লোনা জলের হাওয়ায় এসে ধাক্কা দিলে । আমার কাজের মাঝে মাঝে কান্নাধারার দোলা তুমি থামতে দিলে না-যে । আমায় পরশ করে প্রাণ সুধায় ভরে তুমি যাও যে সরে, বুঝি আমার ব্যথার আড়ালেতে দাড়িয়ে থাক, ওগো দুখজাগানিয়া । নন্দিনী । তোমাকে একটা কথা বলি, পাগল । যে-দুঃখটির গান তুমি গাও, আগে আমি তার খবর পাই নি । বিশু। কেন, রঞ্জনের কাছে ? নন্দিনী । না, দুই হাতে দুই দাড় ধরে সে আমাকে তুফানের নদী পার করে দেয় ; বুনো ঘোড়ার কেশর ধরে আমাকে বনের ভিতর দিয়ে ছুটিয়ে নিয়ে যায় ; লাফদেওয়া বাঘের দুই ভুরুর মাঝখানে তীর মেরে সে আমার ভয়কে উড়িয়ে দিয়ে হা হ৷ করে হাসে । আমাদের নাগাই নদীতে ঝাপিয়ে পড়ে স্রোতটাকে যেমন সে তোলপাড় করে,আমাকে নিয়ে তেমনি সে তোলপাড় করতে থাকে। প্রাণ নিয়ে সর্বস্ব পণ করে সে হারজিতের খেলা খেলে। সেই খেলাতেই আমাকে জিতে নিয়েছে। একদিন তুমিও তো তার মধ্যে ছিলে, কিন্তু কী মনে করে বাজিখেলার ভিড় থেকে একলা বেরিয়ে গেলে । যাবার সময় কেমন করে আমার মুখের দিকে তাকালে বুঝতে পারলুম না— তার পরে কতকাল খোজ পাইনি। কোথায় তুমি গেলে বলে তো ।