পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (পঞ্চদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩৮১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রক্তকরবী هواريها বিশু । গান ও চাদ, চোখের জলের লাগল জোয়ার দুখের পারাবারে, झल কানায় কানায় কানাকানি এই পারে ওই পারে। আমার তরী ছিল চেনার কূলে, বঁধন তাহার গেল খুলে, তারে হাওয়ায় হাওয়ায় নিয়ে গেল কোন অচেনার ধারে । নন্দিনী । সেই অচেনার ধার থেকে এখানে যক্ষপুরীর সুড়ঙ্গ খোদার কাজে কে তোমাকে আবার টেনে আনলে । বিশু। একজন মেয়ে । হঠাৎ তীর পেয়ে উড়ন্ত পাখি যেমন মাটিতে পড়ে যায়, সে আমাকে তেমনি করে এই ধুলোর মধ্যে এনে ফেলেছে ; আমি নিজেকে ভুলে ছিলুম। নন্দিনী । তোমাকে সে কেমন করে ছুতে পারলে । বিশু । তৃষ্ণার জল যখন অাশার অতীত হয়, মরীচিকা তখন সহজে ভোলায় । তার পরে দিকহারা নিজেকে আর খুজে পাওয়া যায় না। একদিন পশ্চিমের জানল। দিয়ে আমি দেখছিলুম মেঘের স্বর্ণপুরী, সে দেখছিল সর্দারের সোনার চূড়া। আমাকে কটাক্ষে বললে, “ওইখানে আমাকে নিয়ে যাও, দেখি কত বড়ো তোমার সামর্থ্য।’ আমি স্পর্ধ করে বললুম, ‘যাব নিয়ে। আনলুম তাকে সোনার চূড়ার নিচে। তখন আমার ঘোর ভাঙল । নন্দিনী । আমি এসেছি এখান থেকে তোমাকে বের করে নিয়ে যাব । সোনার শিকল ভাঙব । বিশু। তুমি যখন এখানকার রাজাকে পর্যন্ত টলিয়েছ, তখন তোমাকে ঠেকাবে কিসে। আচ্ছা, তোমার ওকে ভয় করে না ? নন্দিনী । এই জালের বাইরে থেকে ভয় করে । কিন্তু আমি-যে ভিতরে গিয়ে দেখেছি । বিশু। কী রকম দেখলে । নন্দিনী । দেখলুম মানুষ, কিন্তু প্রকাও ৷ কপালখানা যেন সাতমহল বাড়ির সিংহদ্বার। বাহুদুটো কোন দুর্গম দুর্গের লোহার অর্গল । মনে হল যেন রামায়ণমহাভারত থেকে নেমে এসেছে কেউ । বিশু। ঘরে ঢুকে কী দেখলে । নন্দিনী । ওর বা হাতের উপর বাজপাখি বসে ছিল ; তাকে দাড়ের উপর