পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (পঞ্চদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩৯৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রক্তকরবী פרס অধ্যাপক। তুমি জান না, ও এত বড়ে যে, ওর দোষগুলোও ওকে নষ্ট করতে পারে না । সর্দারের প্রবেশ সর্দার। ওহে বস্তুবাগীশ, বেছে বেছে এই মানুষটিকে এনেছ বুঝি ! ওঁর বিদ্যের বিবরণ শুনেই আমাদের রাজা খেপে উঠেছে। অধ্যাপক । কি-রকম । সর্দার। রাজা বলে, পুরাণ ব’লে কিছু নেই। বর্তমানকালটাই কেবল বেড়ে বেড়ে চলেছে । • পুরাণবাগীশ । পুরাণ যদি নেই তা-হলে কিছু আছে কী করে । পিছন যদি না থাকে তো সামনেটা কি থাকতে পারে। সর্দার। রাজা বলেন, মহাকাল নবীনকে সম্মুখে প্রকাশ করে চলেছে, পণ্ডিত সেই কথাটাকে চাপা দিয়ে বলে, মহাকাল পুরাতনকে পিছনে বয়ে নিয়ে যাচ্ছে। অধ্যাপক । নন্দিনীর নিবিড় যৌবনের ছায়াবীথিকায় নবীনের মায়ামূগীকে রাজা চকিতে চকিতে দেখতে পাচ্ছেন, ধরতে পারছেন না, রেগে উঠছেন আমার বস্তুতত্ত্বর উপর । নন্দিনীর দ্রুত প্রবেশ নন্দিনী । সর্দার, সর্দার, ওকি ! ও কারা ! সর্দার। কিগে নন্দিনী, তোমার কুঁদফুলের মালা পরব যখন ঘোর রাত হবে। অন্ধকারে যখন আমার বারো-আনাই অস্পষ্ট হয়ে উঠবে, তখন হয়তো ফুলের মালায় আমাকেও মানাতে পারে। নন্দিনী । চেয়ে দেখো, ও কী ভয়ানক দৃশু । প্রেতপুরীর দরজা খুলে গেছে নাকি । ওই কারা চলেছে প্রহরীদের সঙ্গে ? ওই-যে বেরিয়ে আসছে রাজার মহলের খিড়কিদরজা দিয়ে ? সর্দার। ওদের আমরা বলি রাজার এ টো । নন্দিনী । মানে কী। সর্দার। মানে একদিন তুমিও বুঝবে, আজ থাক্। নন্দিনী । কিন্তু এ-সব কী চেহারা। ওরা কি মানুষ। ওদের মধ্যে মাংসমজ্জা মনপ্রাণ কিছু কি আছে। সর্দার। হয়তো নেই।