পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (পঞ্চদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৫৫৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গ্রন্থপরিচয় 愛8や লক্ষ্যশূন্ত সিদ্ধি, যাকে ইংরেজিতে বলে সাকসেস, তার বাহন যত দৌড়ে চলে ততই ফল পায়। যুরোপের দেশে দেশে রাষ্ট্রনীতির যুদ্ধনীতির বাণিজ্যনীতির তুমুল ঘোড়দৌড় চলছে জলে স্থলে আকাশে । সেখানে বাহ প্রয়োজনের গরজ অত্যন্ত বেশি হয়ে উঠল, তাই মহন্তত্বের ডাক শুনে কেউ সৰুর করতে পারছে না। বীভৎস সর্বভূক পেটুকতার উদ্যোগে পলিটিক্স নিয়ত ব্যস্ত। তার গাঠকাটা ব্যবসায়ের পরিধি পৃথিবীময় ছড়িয়ে পড়েছে। পূর্বকালে যুদ্ধবিগ্রহের পদ্ধতিতে ধর্মবুদ্ধি যেখানে মাঝে-মাঝে বাধা খাড়া করে রেখেছিল, ডিপ্লমাসি সেখানে আজ লাফমারা burdle race খেলে চলেছে । সবুর সয় না যে। বিষবায়ুবাণ যুদ্ধের অস্ত্ররূপে যখন এক পক্ষ ব্যবহার করলে তখন অন্য পক্ষ ধর্মবুদ্ধির দোহাই পাড়লে । আজ সকল পক্ষই বিষের সন্ধানে উঠে পড়ে লেগেছে। যুদ্ধকালে নিরস্ত্র পুরবাসীদের প্রতি আকাশ থেকে অগ্নিবাণবর্ষণ নিয়ে প্রথমে শোনা গেল ধর্মবুদ্ধির নিন্দাবাণী । আজ দেখি ধামিকের স্বয়ং সামান্য কারণে পল্লিবাসীদের প্রতি কথায়-কথায় পাপবজ সন্ধান করছে। গত যুদ্ধের সময় শত্রুর সম্বন্ধে নানা উপায়ে সজ্ঞানে সচেষ্টভাবে সত্যগোপন ও মিথ্যাপ্রচারের শয়তানী অস্ত্র ব্যবহার প্রকাণ্ডভাবে চলল। যুদ্ধ থেমেছে কিন্তু সেই শয়তানি আজও থামে নি। এমন-কি, অক্ষম ভারতবর্ষকেও প্রবলের প্রপাগাণ্ড রেয়াত করে না। এই-সব নীতি হচ্ছে সৰুরনা-করা নীতি— এরা হল পাপের দ্রুত চাল,— এরা প্রতি পদেই বাহিরে জিতছে বটে কিন্তু সে জিত অস্তরের মানুষকে হারিয়ে দিয়ে। মানুষ আজ নিজের মাথা থেকে জয়মাল্য খুলে নিয়ে কলের গলায় পরিয়ে দিলে। রসাতল থেকে দানব বলছে ‘বাহবা । পশ্চিমযাত্রীর ডায়ারি । ৭ ফেব্রুয়ারি ১৯২৫— ميم. নুতন कांठा ...আমরা যারা এখানে বালীদ্বীপে ] বাহির থেকে এসেছি, আমাদের একটা দুর্লভ সুবিধা ঘটেছে এই যে, আমরা অতীত কালকে বর্তমানভাবে দেখতে পাচ্ছি। সেই অতীত মহৎ, সেই অতীতের ছিল প্রতিভা, যাকে বলে নবনবোন্মেষশালিনী বুদ্ধি ; তার প্রাণশক্তির বিপুল উদ্যম আপন শিল্পস্থষ্টির মধ্যে প্রচুরভাবে আপন পরিচয় দিয়েছে। কিন্তু তবুও সে অতীত, তার উচিত ছিল বর্তমানের পিছনে পড়া, সামনে এসে দাড়িয়ে বর্তমানকে সে ঠেকিয়ে রাখল কেন । বর্তমান সেই অতীতের বাহনমাত্র হয়ে বলছে ‘আমি হার মানলুম ; সে দীনভাবে বলছে, এই অতীতকে প্রকাশ করে রাখাই আমার কাজ, নিজেকে লুপ্ত করে দিয়ে। নিজের পরে বিশ্বাস করবার সাহস নেই। এই