পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (পঞ্চদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৫৬৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গ্রন্থপরিচয় (t8ఫె দেখেন তা হলে হয়তো কিছু রস পেতে পারেন। নয়তে রক্তকরবীর পাপড়ির আড়ালে অর্থ খুঁজতে গিয়ে যদি অনর্থ ঘটে তা হলে তার দায় কবির নয়। নাটকের মধ্যেই কবি আভাস দিয়েছে যে, মাটি খুড়ে যে পাতালে খনিজ ধন খোজা হয় নন্দিনী সেখানকার নয়,– মাটির উপরিতলে যেখানে প্রাণের যেখানে রূপের নৃত্য, যেখানে প্রেমের লীলা, নন্দিনী সেই সহজ মুখের, সেই সহজ সৌন্দর্যের ।” যাত্রী গ্রন্থে ‘পশ্চিমযাত্রীর ডায়ারি’ অংশে ২৮ সেপ্টেম্বর ১৯২৪ তারিখে রবীন্দ্রনাথ প্রসঙ্গত রক্তকরবী সম্বন্ধে যাহা আলোচনা করিয়াছেন নিয়ে উদ্ধৃত হইল : "নারীর ভিতর দিয়ে বিচিত্র রসময় প্রাণের প্রবর্তন যদি পুরুষের উদ্যমের মধ্যে সঞ্চারিত হবার বাধা পায়, তা হলেই তার স্বষ্টিতে যন্ত্রের প্রাধান্ত ঘটে। তখন মানুষ আপনার স্বই যন্ত্রের আঘাতে কেবলই পীড়া দেয়, পীড়িত হয়। এই ভাবটা আমার রক্তকরবী নাটকের মধ্যে প্রকাশ পেয়েছে। যক্ষপুরে পুরুষের প্রবল শক্তি মাটির তলা থেকে সোনার সম্পদ ছিন্ন করে করে আনছে। নিষ্ঠুর সংগ্রহের লুব্ধ চেষ্টার তাড়নায় প্রাণের মাধুর্য সেখান থেকে নির্বাসিত। সেখানে জটিলতার জালে আপনাকে আপনি জড়িত করে মানুষ বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন। তাই সে ভুলেছে, সোনার চেয়ে আনন্দের দাম বেশি ; তুলেছে, প্রতাপের মধ্যে পুর্ণতা নেই, প্রেমের মধ্যেই পুর্ণতা । সেখানে মানুষকে দাস করে রাখবার প্রকাণ্ড আয়োজনে মানুষ নিজেকেই নিজে বন্দী করেছে। এমন সময়ে সেখানে নারী এল, নন্দিনী এল ; প্রাণের বেগ এসে পড়ল যন্ত্রের উপর, প্রেমের আবেগ আঘাত করতে লাগল লুব্ধ দুশ্চেষ্টার বন্ধনজালকে । তখন সেই নারীশক্তির নিগৃঢ় প্রবর্তনায় কী করে পুরুষ নিজের রচিত কারাগারকে ভেঙে ফেলে প্রাণের প্রবাহকে বাধামুক্ত করবার চেষ্টায় প্রবৃত্ত হল, এই নাটকে তাই বর্ণিত আছে।” গল্পগুচ্ছ গল্পগুচ্ছ মজুমদার এজেন্সি হইতে গ্রন্থাকারে দুই খণ্ডে প্রথম প্রকাশিত হয়। প্রথম খণ্ডের প্রকাশকাল ১ আশ্বিন ১৩০৭. দ্বিতীয় খণ্ড প্রকাশিত হয় ১৯০১ খ্ৰীষ্টাব্দে । বর্তমান খণ্ড রচনাবলীতে প্রকাশিত ‘গিন্নি’ গল্পটি অন্যান্য কয়েকটি গল্পের সহিত প্রথম গল্পগুচ্ছে বাদ পড়ে, যদিও রবীন্দ্রনাথের প্রথম গল্পসংগ্ৰহ ছোট গল্পী (১৫ ফাল্গুন ১৩০০) বইটিতে উহ! ইতিপূর্বেই মুদ্রিত হইয়াছিল। ১৯০৮-১৯০৯ খ্ৰীষ্টাবে