পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (পঞ্চদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৬১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মহুয়া বাতায়নে বসে থাকি, কতদিন কী দেখিয়া আশ্বাসে চমকি উঠে আঁখি ; চেয়ে চেয়ে দ্বিধা লাগে শেষে বৃষ্টি হতে হতে দেখি শিলা পড়ে এসে । একদিন রৌদ্রের বেলায় মধ্যাহ্নের জনতার মুখর মেলায় রাজপথ-পাশে দাড়াইচু,—দেখিলাম যারা যায় আসে তাহাদের কায়া সম্মুখে ফেলিয়া চলে দীর্ঘতর ছায়া । শুনিলাম স্পধর্ণতীক্ষু কণ্ঠস্বর ছিন্ন করে দিতে চাহে দেবতার অখণ্ড অম্বর । উজ্জল সজ্জায় দীন অঙ্গ সমাচ্ছন্ন ধনের লজ্জায়। ছুটে চলে অশ্বরথ, তার চেয়ে আড়ম্বরে সঙ্গে ওড়ে ধূলির পর্বত। যখন সেদিন সেই উর্ধ্বশ্বাস লুব্ধ ঠেলাঠেলি নানাশব্দে উঠিছে উদ্বেলি তুমি দেখি পথপ্রান্তে এক হাস্যমুখে নিঃশব্দ কৌতুকে চেয়ে আছ,–হৃদয় আছিল জনস্রোতে, মন ছিল দূরে সব হতে । তুমি যেন মহাকালসমুদ্রের তটে নিত্যের নিশ্চল চিত্তপটে দেখেছিলে চঞ্চলের চলমান ছবি, শুনেছিলে ভৈরবের ধ্যান-মাঝে উমার ভৈরবী । বহে গেল জনতার ঢেউ,— কে-যে তুমি কোথা আছ দেখে নাই কেউ ।