পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (পঞ্চদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/১০৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

කම් রবীন্দ্ৰ-রচনাবলী পরাণপুতলী যথা।। দ্বিগুণ জ্বালিয়া গেল! বিষম অনল নিবাইলে নহে, হিয়ায় রহিল শেল! চণ্ডিদাস-বাণী শুন বিনোদিনি, পিরীতি না কহে কথাপিরীতি লাগিয়ে পরাণ ছাডিলে পিরীতি মিলয়ে তথা! বিদ্যাপতির ন্যায় কবিগণ র্যাহারা সুখের জন্য প্ৰেম চান, তাহারা প্রেমের জন্য এতটা কষ্ট সহা করিতে অক্ষম। কিন্তু চণ্ডিদাস জগতের চেয়ে প্ৰেমকে অধিক দেখেনপিরীতি বলিয়া এ তিন আখরা, এ তিন ভুবন-সার। কিন্তু ইহা বলিয়াও তাহার তৃপ্তি হইল না, দ্বিতীয় ছত্ৰে কহিলেন— এই মোর মনে হয়। রাতি দিনে ইহা বই নাহি আর । প্রেমের আড়ালে জগৎ ঢাকা পড়ে, শুধু তাহাঁই নহে পরাণ-সমান পিরীতি রতন জুকি-নু হৃদয়-তুলেপিরীতি রতন অধিক হইল, পরাণ উঠিল। চুলে। চণ্ডিদাস হৃদয়ের তুলাদণ্ডে মাপিয়া দেখিলেন, প্ৰাণের অপেক্ষা প্ৰেম অধিক হইল। এই তো জগৎগ্রাসী, প্ৰাণ হইতে গুরুতর প্ৰেম। ইহা আবার নিত্যই বাড়িতেছে, বাড়িবার স্থান নাই, তথাপি বাড়িতেছে- مr তখন চণ্ডিদাস কহিলেন তিলে তিলে বাঢ়ি যায়। ঠাঞি নাহি পায় তথাপি বাড়ায়, পরিণামে নাহি খায়! ইহার আর পরিণাম নাই। এত বড়ো প্রেমের ভাব চণ্ডিদাস ব্যতীত আর কোন প্রাচীন কবির কবিতায় পাওয়া যায় ? বিদ্যাপতির সমস্ত পদাবলীতে একটি মাত্র কবিতা আছে, চণ্ডিদাসের কবিতার সহিত যাহার তুলনা হইতে পারে। তাহা শতবার উদ্ধত হইয়াছে, আবার উদ্ধত করি।-- সখি রে, কি পুছসি অনুভব মোয়! সেই পিরীতি অনুরাগ বাখনিতে তিলে তিলে নূতন হােয়। জনম অবধি হম রূপ নেহারানু নয়ন না। তিরাপিত ভেল সেই মধুর বোল শ্রবণ হি শুননু শ্রতিপথে পরশ না গেল।