পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (পঞ্চদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/১৫১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Σ 8 Ν রবীন্দ্র-রচনাবলী কিন্তু উপনিষদের এই ব্ৰহ্মজ্ঞান কেবলমাত্ৰ বুদ্ধিবৃত্তির সাধনা নহে— সকল সত্যকে অতিক্রম করিয়া ঋষি যাহাকে একমাত্র তদোতাৎ সত্যং বলিয়াছেন, প্ৰাচীন ব্ৰহ্মজ্ঞদের পক্ষে তিনি কেবল জ্ঞানলভা একটি দার্শনিক তত্ত্বমাত্র ছিলেন না! একাগ্ৰচিত্ত বাধের ধনু হইতে শার যেরূপ প্রবলবেগে প্ৰত্যক্ষ সন্ধানে লক্ষ্যের দিকে ধাবমান হয়, ব্ৰহ্মর্ষিদের আত্মা সেই পৰমসতোর মধ্যে প্ৰবেশ করিয়া তন্ময় হইবার জন্য সেইরূপ আবেগের সহিত ধাবিত হইত। কেবলমাত্র সত্যনিরূপণ নহে সেই সাতোর মধ্যে সম্পূৰ্ণ আত্মসমৰ্পণ তাঁহাদেৱ লক্ষা ছিল। কারণ, সেই সত্য কেবলমাত্র সত্য নহে, তাহা অমৃত । তাহা কেবল আমাদের জ্ঞানের ক্ষেত্ৰ অধিকার করিয়া নাই, তাহাকে আশ্রয় কবিয়াই আমাদের আত্মার অমরত্ব। সেইজনা সেই অমৃতপুরুষ ছাডিয়া আমাদের আত্মার অন্য গতি নাই, ঋষিরা ইহা প্ৰত্যক্ষ জানিয়াছেন এবং বলিয়াছেন— স যঃ অনাম আত্মনঃ প্ৰিয়ং ব্ৰবাণং ব্ৰয়াৎ অর্থাৎ, যিনি পরমাত্মা ব্যতীত অনাকে আপনার প্ৰিয় করিয়া বলেন- প্ৰিয়ং রোৎস্যতীতি--- তাহার প্রিয় বিনাশ পাইবে! আমাদের জ্ঞানের পক্ষে যে সত্য সকল সত্যের শ্রেষ্ঠ আমাদের আত্মার পক্ষে তাহাই সকল প্ৰিয়ের প্ৰিয়তম DBDBkhBDBD SBBBS BBSDBB BBBSBBB BBi uBuBDBBuu BBS DBSS LGS BB সর্বাপেক্ষা অন্তরতর পরমাত্মা ইনি আমাদের পুত্ৰ হইতে প্রিয়, বিজ্ঞা হইতে প্রিয়, অন্য সকল হইতে প্রিয় ; তিনি শুষ্ক জ্ঞানমন্ত্ৰ নহেন, তিনি আমাদের আত্মার প্ৰিয়তম । আধুনিক হিন্দুসম্প্রদায়ের মধ্যে যাহারা বলেন ব্ৰহ্মকে আশ্রয় কবিয়া কোনো ধর্ম সংস্থাপন হইতে পারে না, তাহা কেবল তত্ত্বজ্ঞানীদের অবলম্বনীয়, তাহাবা উক্ত ঋষিবাক স্মরণ করবেন । ইহা কেবল বাক্যমাত্র নহে— প্রতিরসকে অতি নিবিড নিগঢ় রূপে আস্বাদন করিতে না পারলে এমন উদার উন্মুক্ত ভাবে এমন সবল সবল কণ্ঠে প্ৰিয়ের প্ৰিয়ত্ব ঘোষণা করা যায় না। তব্দে তৎ প্ৰেয়ঃ পুত্ৰাং প্রেয়ো DBBDBBD SLBLBBBuBuBL BBDBDBBDBD SuBuBBDBB BBBDBDS DBBDuu S BDBDD SBBD BTBSBBB BBBS করিয়া বলিতেছেন না ; তিনি বলিতেছেন না, যে, তিনি আমার নিকট আমার পুত্ৰ হইতে প্রিয, বিত্ত হইতে প্ৰিয় অন্য সকল হইতে প্রিয় ; তিনি বলিতেছেন আত্মার নিকটে তিনি সবাপেক্ষা অস্তরিতরজীবাত্মা মাত্রেরই নিকট তিনি পুত্র হইতে প্রিয়, বিত্ত হইতে প্রিয়, অন্য সকল তইতে প্রিয়— জীবাত্মা যখনই তাহাকে যথার্থক্যপে উপলব্ধি করে তখনই বুঝিতে পারে তাহা অপেক্ষা প্রয়তর আর কিছুই নাই ! অতএব পরমাত্মাকে যে কেবল জ্ঞানের দ্বারা জানিব তাঁদে তৎ সত্যং তােহা নহে, তাহাকে হৃদয়ের দ্বারা অনুভব করিব তদস্মৃতং। তাহাকে সকলের অপেক্ষা অধিক বলিয়া জানিব এবং সকলের অপেক্ষা অধিক বলিয়া প্রীতি করিব। জ্ঞান ও প্ৰেমাসমেত আত্মাকে ব্ৰহ্মে সমর্পণ করার সাধনাই ব্ৰাহ্মধর্মের সাধনা- তদ্ভাবগতেন চেতসা এই সাধনা করিতে হইবে। ইহা নীরস তত্ত্বজ্ঞান নহে, ইহা ভক্তিপ্রতিষ্ঠিত ধর্ম। উপনিষদের ঋষি যে জীবাত্মামাত্রেরই নিকট পরমাত্মাকে সর্বাপেক্ষা প্ৰতিজনক বলিতেছেন তাহার অর্থ কী? যদি তাহাই হইবে। তবে আমরা তঁহাকে পরিত্যাগ করিয়া ভ্ৰাম্যমাণ হই কেন ? একটি দৃষ্টান্তদ্বারা ইহার অর্থ বুঝাইতে ইচ্ছা করি। কোনো রসজ্ঞ ব্যক্তি যখন বলেন কাব্যরসাবতারণায় বাল্মীকি শ্রেষ্ঠ কবি, তখন এ কথা বুঝিলে চলিবে না যে, কেবল তাহারই নিকট বাল্মীকির কাব্যরস সর্বাপেক্ষা উপাদেয়। তিনি বলেন সকল পাঠকের পক্ষেই এই কাব্যরস সর্বশ্রেষ্ঠ- ইহাই মনুষ্যপ্রকৃতি। কিন্তু কোনো অশিক্ষিত গ্ৰাম্য জনপদ বাল্মীকির কাব্য অপেক্ষা যদি স্থানীয় কোনো পাচালিগানে অধিক সুখ অনুভব করে তবে তাহার কারণ তাহার অজ্ঞতামাত্র। সে লোক অশিক্ষাবশত বাল্মীকির কাব্য যে কী তাহ জানে না এবং সেই কাব্যের রাস যেখানে, অনভিজ্ঞতাবশত সেখানে সে প্রবেশ লাভ করিতে পারে না। কিন্তু তাহার অশিক্ষা-বাধা দূর করিয়া দিবামাত্র যখনই সে বাল্মীকির কাব্যের যথার্থ পরিচয় পাইবে তখনই সে স্বভাবতই