অনুবাদ-চর্চা 8ՀԳ করুন, এইটি শেষ সীট এবং আমাদেরই শেষ গাড়ি।” আমি আমার সুকাল বেলাকার সারথির কণ্ঠস্বর চিনিলাম। মনুষ্যজাতীয় সেই অপূর্ব পদার্থটিকে আমি পুনর্বাের পাইলাম। এই সৌভাগ্য আমার নিকট দৈবঘটিত বোধ হইল এবং আমি ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিলাম!! আর এক মুহূর্ত দেরি করিলেই আমি পদব্ৰজে যাত্ৰা করিতে বাধ্য হইতাম- খাটি দেড় ক্রোশ পল্লীপথ। আমি বলিলাম, “তোমাকে আবার দেখিয়া আনন্দিত হইলাম।” লোকটি উত্তর দিল, “মহাশয়, তাড়াতাড়ি ঢুকিয়া পড়ন।” আমি সত্বর নিজেকে গাড়ির মধ্যে প্রতিষ্ঠিত করিলাম। >br○ আমি উপবিষ্ট হইলে পর সারথি দরজার হ্যান্ডেলে হাত রাখিয়া আমাকে বলিল, “মহাশয়, জানেন কি যে, ঘণ্টা উত্তীৰ্ণ হইয়া গিয়াছে ?” আমি বলিলাম, “কিসের ঘণ্টা ?” “আটটা।” “ঠিক কথা। আমি ঐ রকমই বাজিতে শুনিয়াছি বটে।" উত্তরে লোকটি বলিল, “সাহেব, জানেন যে, সন্ধ্যার আটটার পর ভাড়ার পরিবর্তন হয়। রওয়ানা হইবার পূর্বেই ভাড়া দেওয়া দস্তুর।” আমি টাকার থলিটা টানিয়া বাহির করিয়া উত্তর দিলাম, “নিশ্চয়ই, কত ভাড়া?” লোকটি মিষ্টস্বরে উত্তর দিল, “বারো ফ্রাঙ্ক সাহেব!” তৎক্ষণাৎ কার্যপ্রণালীটি বুঝিলাম। প্ৰাতঃকালে ইহারা লোকপিছু তিন সূ হারে দর্শকদিগকে বিয়ারিজে গাড়ি করিয়া লইয়া যাইবে বলিয়া ঘোষণা করে এবং তখনই ভিড় জমিয়া যায়। সন্ধ্যায় লোকপিছু বারো ফ্রাঙ্ক হারে ইহারা সেই ভিড়টিকে Bavonne-এ ফিরাইয়া আনে। Sbr8 ৩১শে মে, ৮.২। আজ হইতে আমি চৌষট্টি বৎসরে পা দিলাম। যে পক্ষাঘাত রোগ প্ৰায় দশ বৎসর পূর্বে আমাকে প্রথম আক্রমণ কবিয়াছে, তখন হইতেই নানা দশান্তরের মধা দিয়া থাকিয়াই গিয়াছে, এখন যেন তাহা বেশ শান্তভাবে স্থায়ী আডিডা গাডিয়া বসিয়াছে এবং সম্ভবত এই ভাবেই চলিবে। প্রায় প্রতিদিনই বাহিরে ঘবিয বেড়াই – কখনো কখনো রেলে কি নীেকাপথে শত শত মাইল জুড়িয়া এক একটি লম্বা চক্ৰ দিয়া আসি, বেশির ভাগ সময় খোলা হওয়ায় থাকি- রোদপোড়া ও মোটাসোটা হইয়াছি; লোকযাত্রা, জনসাধারণ, সমাজের উন্নতি ও সাময়িক সমস্যাসকল সম্বন্ধে আমার ঔৎসুক্য বজায় রাখি। দিনের দুই-তৃতীয়াংশ সময় আমি বেশ আরামে থাকি। আমার মানসিক শক্তি বরাবর। যেমন ছিল সেইরূপ সম্পূৰ্ণ অবিকৃতই আছে, যদিও শারীরিক হিসাবে আমি অর্ধ-অসাড় এবং যত দিন বাচি আমার এইরূপ থাকা সম্ভবপর। কিন্তু আমার জীবনের প্রধান উদ্দেশ্য সিদ্ধ হইয়াছে বলিয়া মনে হয়- আমার বন্ধুরা একান্ত নিষ্ঠাবান ও অনুরক্ত, আত্মীয়স্বজন স্নেহশীল, আর শত্রুদিগকে বাস্তবিক হিসাবের মধ্যেই। ধরি না। Sbr(e. ভারতবর্ষে নানাপ্রকার তালী-জাতীয় বৃক্ষ হইতে নূনপক্ষে তিন লক্ষ টন চিনি প্রতিবৎসর উৎপন্ন হয়। এই পরিমাণ চিনির মধ্যে বঙ্গদেশে প্রায় এক লক্ষ টন উৎপন্ন হয় বলিয়া উক্ত হইয়াছে। মাদ্রাজের যুরোপীয় হীেসগুলি গুড় পরিষ্কার ও চোলাই করিবার অভিপ্ৰায়ে প্রায় পাঁচশ হাজার টন গুড় প্রতিবৎসর ক্রয় করিয়া থাকে। সুতরাং আমাদের এমন একটি ব্যবসায় আছে, সহজ বৎসরে যাহাতে উৎপন্ন দ্রব্যের বাৎসরিক মূল্য মোটামুটি পচিশ লক্ষ পাউন্ড। এ বিষয়ে অতি সামান্যই অনুসন্ধান হইয়াছে। চিনির উৎপাদন হিসাবে তালী-জাতীয় বৃক্ষের শ্রেষ্ঠত এই যে, বৎসর হইতে বৎসরান্তে তাহার উৎপন্ন চিনির পরিমাণ সমান থাকে এবং ইক্ষুর ন্যায়। ইহার উপরে অতিবৃষ্টি বা বন্যার কোনো প্রভাব নাই। চাষের খরচ নাম মাত্র লাগে; এবং ইক্ষু অপেক্ষা তালে দীর্ঘকাল চিনি করিবার মরসুম সম্ভব হয়।
