পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (পঞ্চদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৪৬৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

86ሎbr রবীন্দ্র-রচনাবলী ঝাঝরি কড়া বেড়ি হাতা, শহর থেকে সস্তা ছাতা। কলসি-ভরা এখো গুড়ে মাছি যত বেড়ায় উড়ে। আনল যত চাষীর মেয়ে। অন্ধ। কানাই পথের ‘পরে গান শুনিয়ে ভিক্ষে করে! জল ছিটিয়ে সাতার কাটে। তৃতীয় পাঠ আজ মঙ্গলবার। পাড়ার জঙ্গল সাফ করবার দিন। সব ছেলেরা দঙ্গল বেঁধে যাবে। রঙ্গলালবাবুও এখনি আসবেন। আর আসবেন তার দাদা বঙ্গবাবু। সিদ্ধি, তুমি দৌড়ে যাও তো। অনঙ্গদাদাকে ধরো, মোটরগাড়িতে তাদের আনবেন। সঙ্গে নিতে হবে কুড়ল, কোদাল, ঝাটা, কুড়ি। আর নেব ভিঙ্গি মেথরকে। এবার পঙ্গপাল এসে বড়ো ক্ষতি করেছে। ক্ষিতিবাবুর ক্ষেতে একটি ঘাস নেই। অক্ষয়বাবুর বাগানে কপির পাতাগুলো খেয়ে সাঙ্গ ক’রে দিয়েছে। পঙ্গপাল না। তাড়াতে পারলে এবার কাজে ভঙ্গ দিতে হবে। ঈশানবাবু ইঙ্গিতে বলেছেন, তিনি কিছু দান করবেন। চতুর্থ পাঠ চন্দননগর থেকে আনন্দবাবু আসবেন। তিনি আমার পাড়ার কাজ দেখতে চান। দেখো, যেন নিন্দা না হয়। ইন্দুকে ব'লে দিয়ে, তার আতিথ্যে যেন খুঁত না থাকে। তার ঘরে সুন্দর দেখে ফুলদানি রেখো। যেন রাখে। ঘর বন্ধ যেন না থাকে। সন্ধ্যা হ’লে ঘরে ধুনোর গন্ধ দিয়ে। দীনবন্ধুকে রেখো পাশের ঘরেই। তাদের সঙ্গে সিন্ধুবাবু আসবেন, তাকে অন্য ঘরে রাখতে হবে। বিন্দুকে ব'লে মালচন্দন তৈরি রাখা চাই। বন্দেমাতরং গান নন্দী জানে তো ? সেই অন্ধ গায়ককেও ডেকে এনো। সে তো মন্দ গায় a পঞ্চম পাঠ বর্ষা নেমেছে। গর্মি আর নেই। থেকে থেকে মেঘের গর্জন আর বিদ্যুতের চমকানি চলছে। শিলং পর্বতে ঝর্নার জল বেড়ে উঠল। কর্ণফুলি নদীতে বন্যা দেখা দিয়েছে। সর্ষে ক্ষেত ডুবিয়ে দিলে। দুৰ্গানাথের আঙিনায় জল উঠেছে। তার দর্মার বেড়া ভেঙে গেল। বেচারা গোরুগুলোর বড়ো দুৰ্গতি। এক হাঁটু পাকে দাড়িয়ে আছে। চাষীদের কাজকর্ম সব বন্ধ। ঘরে ঘরে সর্দি-কাশি। কর্তবাবু বর্ষাতি পরে চলেছেন। সঙ্গে তার আর্দালি তুর্কি মিঞা। গর্ত সব ভরে গিয়ে ব্যাঙের বাসা হল। পাড়ার নর্দমাগুলো জলে ছাপিয়ে গেছে। ঐখানে মা পুকুরপাড়ে হোথায় হব বনবাসী কেউ কোথাও নেই।