পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (পঞ্চবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১১৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রবীন্দ্র-রচনাবলী সে আমার রচেছিল জন্মদিন--- চিরদিন তার স্রোতে বাধন-বাহিরে মোর চলমান বাস। ভেসে চলে তীর হতে তীরে । আমি ব্রাত্য, আমি পথচারী, অবারিত আতিথ্যের অন্নে পূর্ণ হয়ে ওঠে বারে বারে নির্বিচারে মোর জন্মদিবসের থালি । উদয়ন ২৩ ফেব্রুয়ারি, ১৯৪১ । দুপুর २.3० তোমাদের জানি, তবু তোমরা যে দূরের মানুষ । তোমাদের আবেষ্টন, চলাফের, চারি দিকে ঢেউ ওঠ-পড়া, সবই চেন জগতের তবু তার আমন্ত্রণে দ্বিধ— সব হতে আমি দূরে, তোমাদের নাড়ীর যে ভাষা সে আমার আপন প্রাণের, বিষঃ বিস্ময় লাগে যবে দেখি স্পর্শ তার সসংকোচ পরিচয় নিয়ে আনে যেন প্রবাসীর পাণ্ডুবৰ্ণ শীর্ণ আত্মীয়ত । আমি কিছু দিতে চাই, তা না হলে জীবনে জীবনে মিল হবে কী করিয়—আসি ন নিশ্চিত পদক্ষেপে— ভয় হয়, রিক্ত পাত্ৰ বুঝি, বুঝি তার রসস্বাদ হারায়েছে পূর্বপরিচয়, বুঝি আদানে প্রদানে রবে না সম্মান। তাই আশঙ্কার এ দূরত্ব হতে এ নিষ্ঠুর নিঃসঙ্গতা-মাঝে তোমাদের ডেকে বলি, যে জীবনলক্ষ্মী মোরে সাজায়েছে নব নব সাজে তার সাথে বিচ্ছেদের দিনে নিভায়ে উৎসবদীপ দারিদ্র্যের লাঞ্ছনীয় ঘটবে না কভু অসম্মান, অলংকার খুলে নেবে, একে একে বর্ণসজ্জাহীন উত্তরীয়ে