পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (পঞ্চবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১৩০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

> >や রবীন্দ্র-রচনাবলী ছাড়িয়ে গানের কবিকে দেখা যাচ্ছে বেশি, ঐখানে ইনি দেখছেন ওঁর প্রতিদ্বন্দ্বীকে । মনে মনে তর্ক করছেন, কী ক’রে আধুনিক ভাষায় এর খুব একটা কর্কশ জবাব দেওয়৷ যায়। আমি বলি– কাজ নেই, একট। সাদা ভাবের গান সাদা মুরে ধরো, যদি সম্ভব হয় ওঁর মনটা সুস্থ হোক । _ নটরাজ। মহারাজের আদেশ পালন করব । আমাদের ভাষায় যতটা সম্ভব সহজ করেই প্রকাশ করব, কিন্তু যত্নেকৃতে যদি ন সিধ্যতি কোইত্রদোষ । সকরুণা, এই বারিপতনশব্দের সঙ্গে মিলিয়ে বিচ্ছেদের আশঙ্কাকে স্বরের যোগে মধুর করে তোলে। ভেবেছিলেম আসবে ফিরে, তাই ফাগুন-শেষে দিলেম বিদায় । যখন গেলে তখন ভাসি নয়ননীরে, এখন শ্রাবণদিনে মরি দ্বিধায় । বাদল-সাঝের অন্ধকারে আপনি কাদাই আপনারে, এক ঝরে ঝরে বারিধারে ভাবি কী ডাকে ফিরাব তোমায় । যখন থাক আঁখির কাছে তখন দেখি ভিতর বাহির সব ভ’রে আছে । সেই ভরা দিনের ভরসাতে চাই বিরহের ভয় ঘোচাতে, তবু তোমা-হারা বিজন রাতে কেবল “হারাই হারাই’ বাজে হিয়ায় ॥ সভাকবি । নটরাজ, আমার ধারণা ছিল বসন্ত ঋতুরই ধাতটা বায়ুপ্রধান— সেই বায়ুর প্রকোপেই বিরহমিলনের প্রলাপট প্রবল হয়ে ওঠে। কফপ্রধান ধাত বর্ষার-— কিন্তু তোমার পালায় তাকে ক্ষেপিয়ে তুলেছ। রক্ত হয়েছে তার চঞ্চল। তা হলে বর্ষায় বসন্তে প্রভেদটা কী । নটরাজ। সোজা কথায় বুঝিয়ে দেব— বসন্তের পাখি গান করে, বর্ষার পাখি উড়ে চলে । সভাকবি । তোমাদের দেশে এইটেকেই সোজা কথা বলে ! আমাদের প্রতি কিছু দয়া থাকে যদি কথাটা আরও সোজা করতে হবে।