পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (পঞ্চবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১৩১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শ্রাবণগাথা SS a নটরাজ। বসন্তে কোকিল ডালপালার মধ্যে প্রচ্ছন্ন থেকে বনচ্ছায়াকে সকরুণ করে তোলে— আর বর্ষায় বলাকাই বল, হংসশ্রেণীই বল, উধাও হয়ে মুক্ত পথে চলে শূন্যে— কৈলাসশিখর থেকে বেরিয়ে পড়ে আকুল সমুদ্রতটের দিকে। ভাবনার এই দুই জাত আছে। মূখের তর্ক ছেড়ে স্বরের ব্যাখ্য। ধরা যাক। পুরবিকা, ধরে। গান । মেঘের কোলে কোলে যায় রে চলে বকের পাতি ; ওরা ঘরছাড় মোর মনের কথা যায় বুঝি ঐ গাথি গাথি । সুদূরের বাশির স্বরে কে ওদের হৃদয় হরে, দুরাশার দুঃসাহসে উদাস করে ; উধাও হাওয়ার পাগলামিতে পাথ। ওদের ওঠে মাতি । ওদের ঘুম ছুটেছে, ভয় টুটেছে একেবারে ; অলক্ষেতে লক্ষ্য ওদের, পিছন পানে তাকায় না রে । যে বাস ছিল জানা, সে ওদের দিল হানা, না জানার পথে ওদের নাই রে মান ; ওরা দিনের শেষে দেখেছে কোন মনোহরণ আঁধার রাতি । নটরাজ। আপনার ঐ সভাকবির মুখখান কিছুক্ষণ বন্ধ রাখুন। ওঁর গোমুখীবিনিঃস্থত বাক্যনিঝর এ দেশের কঠোর শিলাখণ্ডের উপর পাক খেয়ে বেড়াক । আমরা এনেছি স্কুরলোকের ধারা— আলোকের সভাপ্রাঙ্গণ ধুয়ে দিতে হবে। কাজ শেষ হলেই বিদায় নেব । রাজা । আচ্ছ। নটরাজ, তোমার পথের উপদ্রবকে নিরস্ত রাখব। পাল তুলে চলে যাও । pg নটরাজ। মঞ্জুল, তা হলে হাওয়াটা শোধন করে নিয়ে আর-একবার আবাহনগান ধরে। তৃষ্ণার শান্তি, সুন্দরকান্তি, তুমি এলে নিপিলের সন্তাপভঞ্জন।