পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (পঞ্চবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২৪৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তিন সঙ্গী . H ఫిలి: “সুন্দরী মেয়ের বেলাতেই বিধাতাকে মান বুঝি ?” "নিন্দে করবার দরকার হলে যেমন করে হোক একটা প্রতিপক্ষ খাড় করতে হয়। দুঃখের দিনে যখন অভিমান করবার তাগিদ পড়েছিল, তখন রামপ্রসাদ মা’কে খাড়া করে বলেছিলেম, তোমাকে মা ব’লে আর ডাকব না। এতদিন ডেকে যা ফল হয়েছিল, ন। ডেকেও ফল তার চেয়ে বেশি হবে না, মাঝের থেকে নিন্দে করবার কাজটা ভক্ত মিটিয়ে নিলেন । আমিও নিন্দে করবার বেলায় বিধাতার নাম নিয়েছি।” “নিন্দে কিসের ।” “বলছি। শীলাকে আমার গাড়িতে নিয়ে যাচ্ছিলুম ফুটবলের মাঠ থেকে খড় খড়, শব্দ করতে করতে, পিছনের পদাতিকদের নাসারন্ধে, ধোয়৷ ছেড়ে দিয়ে। এমনসময় পাকড়াশিগিন্নি— ওকে জান তো, লম্বা গজের অত্যুক্তিতেও ওকে চলনসই বলতে গেলে বিষম খেতে হয়-- সে আসছিল কোথা থেকে তার নতুন একটা ফায়াট গাড়িতে। হাত তুলে আমাদের গাড়িটা থামিয়ে দিয়ে পথের মধ্যে খানিকক্ষণ ই-ভাই-ও-ভাই করে নিলে। আর ক্ষণে ক্ষণে অাড়ে আড়ে তাকাতে লাগল আমার রঙ-চটে-যাওয়া গাড়ির হুড, আর জরাজীর্ণ পাদানটার দিকে। তোমাদের ভগবান যদি সাম্যবাদী হতেন, তা হলে মেয়েদের চেহারায় এত বেশি উচুনিচু ঘটিয়ে রাস্তায় ঘাটে এ রকম মনের আগুন জালিয়ে দিতেন না।” “তাই বুঝি তুমি—” “ই, তাই ঠিক করেছি, যত শিগগির পারি শীলাকে ক্রাইসলারের গাড়িতে চড়িয়ে পাকড়াশিগিল্লির নাকের সামনে দিয়ে শিঙা বাজিয়ে চলে যাব । আচ্ছা, একটা কথা জিজ্ঞাসা করি, সত্যি করে বলে, তোমার মনে একটুখানি খোচা কি—” s “আমাকে এর মধ্যে টান কেন। বিধাতা আমার রূপ নিয়ে তো খুব বেশি বাড়াবাড়ি করেন নি। আর আমার গাড়িখানাও তোমার গাড়িখানার উপর টেক্কা দেবার যোগ্য নয় ।” f অভীক তাড়াতাড়ি চৌকি থেকে উঠে মেঝের উপর বিভার পায়ের কাছে বসে তার হাত চেপে ধরে বললে, “কার সঙ্গে কার তুলনা। আশ্চর্য, তুমি আশ্চর্য, আমি বলছি, তুমি আশ্চর্য। আমি তোমাকে দেখি আর আমার ভয় হয় কোনদিন ফস করে মেনে বসব তোমার ভগবানকে। শেষে কোনো কালে আর আমার পরিত্রাণ থাকবে না। তোমার ঈর্ষ। আমি কিছুতেই জাগাতে পারলুম না। অন্তত সেটা জানতে । দিলে না আমাকে। অথচ তুমি জান—” 幽 “চুপ করে। আমি কিছু জানি নে। কেবল জানি অদ্ভুত, তুমি অদ্ভুত, স্বাক্ট