পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (পঞ্চবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২৯৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

२१४ রবীন্দ্র-রচনাবলী একটা শিখে নেবার তত্ব বই কি ”. “আর-একটা কথা কবুল করছি। এইমাত্র তোমার সঙ্গে কথা কইতে কইতে একটা হিসেব মনে মনে কষছিলুম, সেও অঙ্কের হিসেব। ভেবে দেখো, বয়সটা যদি অন্তত দশটা বছর কম হত তা হলে খামক আজ একটা বিপদ ঘটত। কোলিশন ঐটুকু পাশ কাটিয়ে গেল আর কি ! তৰু বাম্পের জোয়ার উঠছে বুকের মধ্যে। ভেবে দেখে, স্বাক্টটা আগাগোড়াই কেবল অন্ধকষার খেলা।” * এই বলে চৌধুরী দুই হাটু চাপড়িয়ে হাহা করে হেসে উঠলেন। একটা কথা তার ছশ ছিল না যে, তার সঙ্গে দেখা করবার আগে সোহিনী দুঘণ্টা ধরে রঙে চঙে এমন করে বয়স বদল করেছে যে স্বষ্টিকর্তাকে আগাগোড়াই দিয়েছে ঠকিয়ে । 8 পরের দিন অধ্যাপক এসে দেখলেন সোহিনী রোয়া-ওঠ৷ হাড়-ৰের-করা একটা কুকুরকে স্বান করিয়ে তোয়ালে দিয়ে তার গা মুছিয়ে দিচ্ছে । চৌধুরী জিগ গেস করলেন, “এই অপয়মন্তটাকে এত সম্মান কেন।” ওকে বাচিয়েছি ব'লে। পা ভেঙেছিল মোটরের তলায় পড়ে, আমি সারিয়ে তুলেছি ব্যাণ্ডেজ বেঁধে। এখন ওর প্রাণটার মধ্যে আমারও শেয়ার আছে।” “রোজ রোজ ঔ অলুক্ষনের চেহার দেখে মন খারাপ হয়ে যাবে না ?” “চেহার দেখবার জন্যে ওকে তে রাখি নি। মরতে মরতে এই যে ও সেরে উঠছে, এটা দেখতে আমার ভালো লাগে। ঐ প্রাণীর বেঁচে থাকবার দরকারটা যখন দিনে দিনে মিটিয়ে দিই, তখন ধর্মকর্ম করতে ছাগলছানার গলায় দড়ি বেঁধে আমাকে কালীতলায় দৌড়তে হয় না। তোমাদের বায়োলজির ল্যাবরেটরির কানাখোড়া কুকুর-খরগোশগুলোর জন্যে আমি একটা হাসপাতাল বানাব স্থির করেছি।” i “মিসেস মল্লিক, তোমাকে যতই দেখছি তাক লাগছে।” - “আরও বেশি দেখলে ওটার উপশম হবে। রেবতীবাবুর খবর দেবেন বলেছিলেন, সেট আরম্ভ করে দিন।” * “আমার সঙ্গে দূর সম্পর্কে ওদের যোগ আছে । তাই ওদের ঘরের খবর জানি । রেবতীকে জন্ম দিয়েই ওর মা যান মারা । বরাবর ও পিসির হাতে মানুষ। ওর পিসির আচারনিষ্ঠ৷ একেবারে নিরেট। এতটুকু খুঁত নিয়ে ওঁর খুতখুতুনি সংসারকে অতিষ্ঠ করে তুলত। তাকে ভয় না করত এমন লোক ছিল না পরিবারে। ওঁর