পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (পঞ্চবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩০২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

२४७ রবীন্দ্র-রচনাবলী বললে, “এ সমস্তই তৈরি নীলার নিজের হাতে।” সম্পূর্ণ মিথ্যে কথা। এসব কাজে নীলার না ছিল হাত, না ছিল মন । । সোহিনী বললে, “একটু মুখে দিতে হয় বাবা, ঘরে তৈরি তোমারই উদেশে ।” ফরমাশে তৈরি বড়োবাজারের এক চেনা দোকানে । রেবতী হাত জোড় করে বললে, “এ সময়ে খাওয়া আমার অভ্যাস নয়। বরং অকুমতি করেন যদি বাসায় নিয়ে যাই।” o 明、 সোহিনী বললে, “সেই ভালো। অনুরোধ করে খাওয়ানো আমার স্বামীর আইনে বারণ। তিনি বলতেন, মানুষ তে অজগরের জাত নয়।” ow একটা বড়ে টিফিন-ক্যারিয়রে থাকে থাকে সোহিনী খাবার সাজিয়ে দিলে । নীলাকে বললে, “দে তো মা, সাজিতে ফুলগুলি ভালো করে সাজিয়ে। এক জাতের সঙ্গে আর-এক জাত মিশিয়ে দিস নে যেন। আর তোর খোপা ঘিরে ঐ যে সিন্ধের রুমাল জড়িয়েছিস, ওটা পেতে দিস ফুলগুলির উপরে।” 莺 বিজ্ঞানীর চোখে আর্টপিপাস্থর দৃষ্ট উঠল উংস্থক হয়ে। এ যে প্রাকৃত জগতের মাপ-ওজনের বাইরেকার জিনিস। নানা রঙের ফুলগুলির মধ্যে নীলার স্থঠাম আঙল সাজাবার লয় রেখে নানা ভঙ্গিতে চলছিল— রেবতীর চোপ ফেরানো দায় হল । মাঝে মাঝে নীলার মুখের দিকে তাকিয়ে নিচ্ছিল। এক দিকে সেই মুখের সীমানা দিয়েছে চুনিমুক্তেপাল্লার-মিশোলকরা একহার হার জড়ানো চুলের ইন্দ্ৰধন্থ, আরএক দিকে বসন্তীরঙ কাচুলির উচ্ছিত রাঙা পাড়টি। সোহিনী মিষ্টান্ন সাজাচ্ছিল কিন্তু ওর একটা তৃতীয় নেত্র আছে যেন । সামনে যে একটা জাদু চলছিল সে ওর লক্ষ্য এড়ায় নি। 啤 নিজের স্বামীর অভিজ্ঞতা অনুসারে সোহিনীর ধারণা ছিল বিস্তাসাধনার বেড়াদেওয়া খেত যে-সে গোরুর চরবার খেত নয়। আজ আভাস পেল ৰেড়া সকলের পক্ষে সমান ঘন নয়। সেটা ভালে লাগল না । • ' f V পরের দিন সোহিনী অধ্যাপককে ডেকে পাঠালে । বললে, “নিজের গৰে আপনাকে ডেকে এনে মিছিমিছি কষ্ট দিই। হয়তে কাজের ক্ষতিও করি।” “দোহাই তোমার, আরও-একটু ঘন ঘন ডেকে । দরকার থাকে তো ভালো, না থাকে তো আরও ভালে৷ ” i

  • ক্ষপনি জানেন, দামী যন্ত্র সংগ্রহের নেশায় আমার স্বামীর কাণ্ডাকাও জ্ঞান থাকত