পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (পঞ্চবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩০৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২৯, রবীন্দ্র-রচনাবলী ও ফল ক'রে বলে বসল, “ই।” i ভাবলে এ ক্ষেত্রে ই বলাটাই পাকা দস্তুর। এল চা, সেটা কড়া সন্দেহ নেই। কালির মতে রঙ, নিমের মতে তিতে । চ৷ আনলে মুসলমান খানসামা। এটাও ওকে পরীক্ষা করবার জন্যে। আপত্তি করতে ওর মুখে কথা সরল না। এই সংকোচ ভালে লাগল না সোহিনীর। খানসামাকে বললে, “চ-টা ঢেলে দাও-না মোবারক, ঠাণ্ড হয়ে গেল যে ।” খানসামার হাতের পরিবেষণ-প্রত্যাশায় রেবতী বিশ মিনিট আগে এখানে আসে নি । .J #, কী দুঃখে ষে মুখে চামচ উঠছিল অন্তর্ষামীই জনছিলেন, আর জনছিল সোহিনী। হাজার হোক মেয়েমানুষ, দুৰ্গতি দেখে বললে, “ও পেয়ালাটা থাকৃ। দুধ ঢেলে দিচ্ছি, তার সঙ্গে কিছু ফল খেয়ে নাও। সকাল সকাল এসেছ, বোধ হয় কিছু খেয়ে আসা হয় নি।” কথাটা সত্য। রেবতী ভেবেছিল আজও সেই বোটানিকালের পুনরাবৃত্তি হবে। কাছ দিয়েও গেল না, মুখে রয়ে গেল কড়া চায়ের তিতে স্বাদ আর মনে রয়েছে আশাভঙ্গের তিতে অভিজ্ঞত।। کي i এমনসময় প্রবেশ করলেন অধ্যাপক ; ঘরে ঢুকেই রেবতীর পিঠ চাপড়িয়ে বললেন, “কী রে হল কী, সব যে একেবারে ঠাণ্ড হিম। খুকুর মতো বসে বসে দুধ খাচ্ছিস ঢকে ঢক। চার দিকে যা দেখছিস একি খোকাবাবুর খেলনার দোকান। যাদের চোখ আছে তার দেখেছে, মহাকালের চেলার এইখানে আসে তাণ্ডবনৃত্য .করতে ।” "আহ কেন বকছেন। না খেয়েই ও বেরিয়েছিল আজ সকালে। এল যখন, তখন দেখলুম মুখ যেন শুকনো।” g “ঐ রে পিসিমা দি সেকেও । এক পিসিমা দেবে এক গালে চাপড়, আর-এক পিসিম দেবে অন্য গালে চুমে। মাঝখানে পড়ে ছেলেটা যাবে ভিজে কাদা হয়ে। মাসল কথ৷ কী জান, লক্ষ্মী যখন আপনি সেধে আসেন চোখে পড়েন না ; যারা সাত মুল্লুক ঘুরে তাকে খুজে বের করে, ধরা দেন তিনি তাদেরই কাছে। না-চেয়ে পাওয়ার মতে না-পাওয়ার আর রাস্ত নেই। আচ্ছ বলে দেখি মিসেস—দুর হোক গে ছাই মিসেস, আমি ডাকবই তোমাকে সোহিনী ব’লে, এতে তুমি রাগই কর আর যাই কর।” i “মরণ আমার, রাগ করতে যাব কেন। ডাকুন আমাকে সোহিনী ব’লে, স্থহি বললে আমার কান জুড়িয়ে যাবে।” ।