পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (পঞ্চবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩৪৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

'రిలు - রবীন্দ্র-রচনাবলী হবে এই ভয় ছিল ; নিজেকে আপনার মুক্ত রাখতেই হবে। আপনি যে সাধক। আপনি তাই নিষ্ঠুর, নিষ্ঠুর নিজের প্রতি, নিষ্ঠুর তার পরে যে আপনার পথের সামনে আসে। এই নিষ্ঠুরতায় আপনার বীরত্ব দৃঢ়প্রতিষ্ঠিত।” কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে আবার সে বললে, “বাংলা সাহিত্য বোধ হয় আপনি পড়েন না। কচও দেবযানী বলে একটা কবিতা আছে। তার শেষ কথাটা এই মেয়েদের ব্ৰত পুরুষকে বাধা, আর পুরুষের ব্রত মেয়ের বঁাধন কাটিয়ে স্বৰ্গলোকের রাস্ত বানানো। কচ বেরিয়ে পড়েছিল দেবযানীর অনুরোধ এড়িয়ে, আর আপনি মায়ের অনুনয়- একই কথা । به ', t আমি বললুম, “দেখুন, আমি হয়তে ভুল করেছিলুম। মেয়েদের নিয়ে পুরুষের কাজ যদি না চলে তা হলে মেয়েদের সৃষ্টি কেন।” অচিরা বললে, “বারে-আনার চলে, মেয়ের তাদের জন্যেই । কিন্তু বাকি মাইনরিটি যারা সব কিছু পেরিয়ে নতুন পথের সন্ধানে বেরিয়েছে তাদের চলে না। সব-পেরোবার মানুষকে মেয়েরা যেন চোখের জল ফেলে রাস্তা ছেড়ে দেয়। যে দুর্গম পথে মেয়েপুরুষের চিরকালের দ্বন্ধ সেখানে পুরুষেরা হোক জয়ী। যে মেয়ের মেয়েলি, প্রকৃতির বিধানে তাদের সংখ্যা অনেক বেশি, তার ছেলে মানুষ করে, সেবা করে ঘরের লোকের। যে পুরুষ যথার্থ পুরুষ, তাদের সংখ্যা খুব কম ; তারা অভিব্যক্তির শেষ কোঠায়। মাথা তুলছে দুটি-একটি করে। মেয়ের তাদের ভয় পায়, বুঝতে পারে না, টেনে আনতে চায় নিজের অধিকারের গণ্ডিতে। এই তত্ত্ব শুনেছি আমার দাদুর কাছে । “দাছ, তোমার পড়া রেখে আমার কথা শোনে। মনে আছে, তুমি একদিন বলেছিলে, পুরুষ যেখানে অসাধারণ সেখানে সে নিরতিশয় একলা, নিদারুণ তার নিঃসঙ্গত, কেননা তাকে যেতে হয় যেখানে কেউ পৌছয় নি। আমার ডায়ারিতে লেখা আছে।” r অধ্যাপক মনে করবার চেষ্টা করে বললেন, “বলেছিলুম নাকি ? হয়তে বলেছিলুম।” rگټپ অচিরা খুব বড়ো কথাও কয় হাসির ছলে, আজ সে অত্যন্ত গম্ভীর। খানিক বাদে আবার সে বললে, “দেবযানী কচকে কী অভিসম্পাত দিয়েছিল জানেন ?” o or р "at • . “বলেছিল, তোমার সাধনায় পাওয়া বিদ্যা তোমার নিজের ব্যবহারে লাগাতে