পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (পঞ্চবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩৫০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

లిలి8 রবীন্দ্র-রচনাবলী চিরশিশুদের আশ্বাস দিচ্ছে যে তারামায়ের জাত। আমার তো লক্ষ করে। গs. পক্ষীদের মধ্যেও মায়ের জাত নেই কোথায়?” . . . . . চিত্তচাঞ্চল্যে কাজের এত বাধা ঘটছে যে লজ্জা পাচ্ছি মনে মনে । সদরে বাজেটের মিটিঙে রিসর্চবিভাগে আরও কিছু দান মঞ্জুর করিয়ে নেবার প্রস্তাব ছিল। তার সমর্থক রিপোর্টখান। অধেকের বেশি লেখাই হয় নি। অথচ এদিকে ক্রোচের এথেটিক্স নিয়ে ধারাবাহিক আলোচনা শুনে আসছি। অচিরা নিশ্চিত জানে বিষয়টা আমার উপলব্ধি ও উপভোগের সম্পূর্ণ বাইরে। তা হলেও চলত, কিন্তু আমার বিশ্বাস ব্যাপারটাকে সে ইচ্ছে করে শোচনীয় করে তুলেছে। ঠিক এই সময়টাতেই সাওতালদের পার্বণ। তারা পচাই মদ খাচ্ছে আর মাদল বাজিয়ে মেয়েপুরুষে মৃত্য করছে। অচিরা ওদের পরম বন্ধু। মদের পয়সা জোগায়, সালু কিনে দেয় সাওতাল ছেলেদের কোমর বাধবার জন্তে, বাগান থেকে জবাফুলের জোগান দেয় সঁওতাল মেয়েদের চুলে পরবায় । ওকে না হলে তাদের চলেই না। অচিরা অধ্যাপককে বলেছে, ও তো এ কদিন থাকতে পারবে ন৷ অতএব এই সময়টাতে বিরলে আমাকে নিয়ে ক্রোচের রসতত্ত্ব যদি পড়ে শোনান তা হলে আমার সময় আনন্দে কাটবে। একবার সসংকোচে বলেছিলুম, সাওতালদের উৎসব দেখতে আমার বিশেষ কৌতুহল আছে। স্বয়ং অধ্যাপক বললেন, না, সে আপনার ভালে লাগবে না। আমার ইনটেলেকচুয়ল মনোবৃত্তির নির্জলা একান্ততার পরে তার এত বিশ্বাস। মধ্যাহ্নভোজনের পরেই অধ্যাপক গুন গুন করে পড়ে চলেছেন। দুরে মাদলের আওয়াজ এক-একবার থামছে। পরক্ষণেই দ্বিগুণ জোরে বেজে উঠছে। কখনও বা পদশব্দ কল্পনা করছি, কখনও বা হুতাশ হয়ে ভাবছি অসমাপ্ত রিপোর্টের কথা। সুবিধে এই অধ্যাপক জিগ গেসাই করেন না কোথাও আমার ঠেকছে কিনা। তিনি ভাবেন সমস্তই জলের মতে সোজা। মাঝে মাঝে প্রতিবাদ উপলক্ষে প্রশ্ন করেন, আপনারও কি এই মনে হয় না। আমি খুব জোরের সঙ্গে বলি, নিশ্চয় । ইতিমধ্যে কিছুদূরে আমাদের অর্ধসমাপ্ত কয়লার খনিতে মজুরদের হল ষ্ট্রাইক। ঘটালেন যিনি, এই তার ব্যাবসা, স্বভাব এবং অভাব বশত ; সমস্ত কাজের মধ্যে এইটেই সব চেয়ে সহজ। কোনো কারণ ছিল না, কেননা আমি নিজে সোশালিস্ট, সেখানকার বিধিবিধান আমার নিজের হাতে বাধা, কারও সেখানে না ছিল লোকসান, না ছিল অসম্মান । * নূতন যন্ত্র এসেছে জর্মনি থেকে, তারই খাটাবার চেষ্টায় ব্যস্ত আছি। এমন