পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (পঞ্চবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩৫৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তিন সঙ্গী । ७७१ অচিরা একটু ਬੋਲ বললে, “আপনি স্থার খোজ করছেন তেমন মাহৰ পাওয়া যায় বইকি, যদি বড় দরকার পড়ে। তার চৈতন্যকে উসকিয়ে তোলে নিজের দিকেইবন্ত বইয়ে দিয়ে সাধনার বাধ ভেঙে ফেলে। এ সমস্তই কবিদের বানানে কথা, মোহরস দিয়ে জারানো। আপনাদের মতো বুকের-পাটাওয়াল লোকের মুখে মানায় না। প্রথম যখন আপনাকে দেখেছিলুম, তখন দেখেছি আপনি রস খুজে বেড়ান নি, পথ খুড়ে বেরিয়েছিলেন কড়া মাটি ভেঙে। দেখেছি আপনার নিরাসক্ত পৌরুষের মূর্তি— সমস্ত মনপ্রাণ দিয়ে আপনাকে প্রণাম করেছি। আজ । আপনি কথার পুতুল দিয়ে নিজেকে ভোলাতে বসেছেন। এ দশ ঘটালে কে । স্পষ্ট করেই জিজ্ঞাসা করি, এর কারণ কি আমি।” । আমি বললুম, “তা হতে পারে। কিন্তু আপনি তো সাধারণ মেয়ে নন। পুরুষকে আপনি শক্তি দেবেন।” “হা, শক্তি দেব, যদি নিজেকেই মোহ জড়িয়ে না ধরে। আভাসে বুঝেছি আপনি আমার ইতিহাস কিছু কিছু সংগ্রহ করেছেন। আপনার কাছে কিছু ঢাকবার দরকার নেই। আপনি শুনেছেন আমি ভবতোষকে ভালোবেসেছিলুম।” “হঁ৷ শুনেছি।” f “এও জানেন আমার ভালোবাসার অপমান ঘটেছে।” “হ জানি।” * “সেই অপমানিত ভালোবালা অনেকদিন ধরে আমাকে অঁাকড়ে ধরে দুর্বল করেছে। আমি জেদ করে বসেছিলুম তারই একনিষ্ঠ স্থতিকে জীবনের পূজামন্দিরে বসাব। চিরদিন একমনে সেই নিফল সাধন করব মেয়ের যাকে বলে সতীত্ব। নিজের ভালোবাসার অহংকারে সংসারকে ঠেলে ফেলে নির্জনে চলে এসেছি। কর্তব্যকে অবজ্ঞ করেছি নিজের দুঃখকে সম্মান করব বলে। আমার দাদুকে আনায়াসে সরিয়ে এনেছি র্তার কাজের ক্ষেত্র থেকে ৭ যেন এই মেয়েটার হৃদয়ের অহমিকা পৃথিবীর সবকিছুর উপরে। মোহ, মোহ, অন্ধ মোহ ।” খানিক ক্ষণ চুপ করে থেকে হঠাৎ সে বলে উঠল, “জানেন, আপনিই সেই মোহ ভাঙিয়ে দিয়েছেন।” বিস্মিত হয়ে তার মুখের দিকে চেয়ে রইলুম। সে বললে, “আপনিই এই আত্মবিমাননা থেকে ছিনিয়ে এনে আমাকে বাচালেন।” : Eዞ স্তন্ধ রইলুম নিরুত্তর প্রশ্ন নিয়ে। “আপনি তখনও আমাকে দেখেন নি। আমি আশ্চর্য হয়ে দেখেছি আপনার