পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (পঞ্চবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৪০০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

○ケ8 রবীন্দ্র-রচনাবলী হঠাৎ জলে ওঠ। তারাদের আবির্ভাবকে নতুন আবির্ভাব মনে করে এদের নাম দেওয়া হয়েছিল নতুন তারা। i কিছুকাল পূর্বে লাসের্ট অর্থাৎ গোধিক নামধারী নক্ষত্ররাশির কাছে একটি, যাকে বলে নতুন তারা, হঠাৎ অত্যুজ্জল হয়ে জলে উঠল। পরে পরে চারটে জ্যোতির খোলস দিলে ছেড়ে । দেখা গেল ছাড়া খোলস দৌড় দিয়েছে এক সেকেণ্ডে ২২০০ মাইল বেগে। এই নক্ষত্র আছে প্রায় ২৬০০ আলো-চলা-বছর দূরে। অর্থাৎ এই যে তারার গ্যাস জলনের উৎপতন আজ আমাদের চোখে পড়ল এটা ঘটেছিল খ্ৰীস্টজন্মের সাড়ে ছশো বছর পূর্বে। তার এইসব ছেড়ে-ফেলা গ্যাসের খোলসগুলির কী হল এ নিয়ে আন্দাজ চলেছে। সে কি ওর বন্ধন কাটিয়ে মহাশূন্যে বিবাগী হয়ে যাচ্ছে, না ওর টানে বাধা পড়ে ঠাণ্ড হয়ে ওর আনুগত্য ক’রে চলেছে। এই যে তারা জলে-ওঠা, এ ঘটনাকে বিচার করে কোনো কোনো পণ্ডিত বলেছেন হয়তো এমনি করেই নক্ষত্রের বিস্ফোরণ থেকে ছাড়া-পাওয়া গ্যাসপুঞ্জ হতেই গ্রহের উৎপত্তি ; হয়তে সূর্য এক সময়ে এইরকম নতুন তারার রীতি অনুসারে আপন উৎসারিত বিচ্ছিন্ন অংশ থেকেই গ্রহসন্তানদের জন্ম দিয়েছে। এ মত যদি সত্য হয় তা হলে সম্ভবত প্রত্যেক প্রাচীন নক্ষত্রেরই এক সময়ে একটা বিস্ফোরণের দশা আসে, আর গ্রহবংশের স্বষ্টি করে। হয়তো আকাশে নিঃসন্তান নক্ষত্র অল্পই আছে। দ্বিতীয় মত এই যে, বাহিরের একটা চলতি তারা অন্য আর-একটা তারার টানের এলাকার মধ্যে এসে পড়ে ঘটিয়েছে এই প্রলয় কাও । এই মত অনুসারে পৃথিবীর উৎপত্তির আলোচনা পরে করা যাবে। . আমাদের নাক্ষত্ৰজগতে যেসব নক্ষত্র আছে তার নানা বুকুমের। কেউ বা স্বর্ষের চেয়ে দশ হাজার গুণ বেশি আলো দেয়, কেউ বা দেয় একশো ভাগ কম। কারও বা পদার্থপুঞ্জ অত্যন্ত ঘন, কারও বা নিতান্তই পাতলা। কারও উপরিতলের তাপমাত্রা বিশ-ত্রিশ হাজার সেণ্টিগ্রেড পরিমাণে, কারও বা তিন হাজার সেটিগ্রেডের বেশি নয়, কেউ বা বারে বারে প্রসারিত কুঞ্চিত হতে হতে আলো-উত্তাপের জোয়ার-ভাট খেলাচ্ছে, কেউ বা চলেছে এক এক ; কারাও বা চলেছে জোড় বেঁধে, তাদের সংখ্যা নক্ষত্রদলের একতৃতীয়াংশ। জুড়ি নক্ষত্রের ভারাবর্তনের জালে ধরা পড়ে যাপন করছে প্রদক্ষিণের পালা। জুড়ির মধ্যে যার জোর কম প্রদক্ষিণের দায়ট পড়ে তারই পরে। যেমন স্বৰ্ষ আর পৃধিৱী। অবল পৃথিবী যে কিছু টান দিচ্ছে না তা নয় কিন্তু স্বৰ্ষকে বড়ে বেশি বিচলিত করতে পারে ন। প্রদক্ষিণের অনুষ্ঠানটা এক সম্পন্ন করছে পৃথিবীই। যেখানে দুই জ্যোতিষ্ক প্রায় সমান জোরের সেখানে উভয়ের