পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (পঞ্চবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৯২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ԳԵր রবীন্দ্র-রচনাবলী সব চেয়ে দুর্গম-যে মানুষ আপন অন্তরালে, তার কোনো পরিমাপ নাই বাহিরের দেশে কালে । সে অন্তরময় অন্তর মিশালে তবে তার অন্তরের পরিচয় । পাই নে সর্বত্র তার প্রবেশের দ্বার, বাধ হয়ে আছে মোর বেড়াগুলি জীবনযাত্রার । চাষি খেতে চালাইছে হাল, র্তগতি বসে তাত বোনে, জেলে ফেলে জাল— বহুদূরপ্রসারিত এদের বিচিত্র কর্মভার তারি পরে ভর দিয়ে চলিতেছে সমস্ত সংসার । অতি ক্ষুদ্র অংশে তার সম্মানের চিরনির্বাসনে সমাজের উচ্চ মঞ্চে বসেছি সংকীর্ণ বাতায়নে । মাঝে মাঝে গেছি আমি ও পাড়ার প্রাঙ্গণের ধারে, ভিতরে প্রবেশ করি সে শক্তি ছিল না। একেবারে । জীবনে জীবন যোগ কর\ ন। হলে কৃত্রিম পণ্যে ব্যর্থ হয় গানের পসর\ । তাই আমি মেনে নিই সে নিন্দার কথ। আমার সুরের অপূর্ণত। আমার কবিতা, জানি আমি, গেলেও বিচিত্র পথে হয় নাই সে সর্বত্রগামী । কৃষাণের জীবনের শরিক যে জন, কর্মে ও কথায় সত্য আত্মীয়তা করেছে অর্জন, যে আছে মাটির কাছাকাছি, সে কবির বাণী-লাগি কান পেতে আছি । সাহিত্যের আনন্দের ভোজে নিজে যা পারি না দিতে নিত্য আমি থাকি তারি থেণজে । সেটা সত্য হোক, শুধু ভঙ্গী দিয়ে যেন না ভোলায় চোখ। সত্য মূল্য না দিয়েই সাহিত্যের খ্যাতি করা চুরি ভালো নয়, ভালো নয় নকল সে শৌখিন মজ দুরি।