পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (পঞ্চম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১১৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৯৬ রবীন্দ্র-রচনাবলী যৌবনের জয়গান – সেইমতো প্রত্যক্ষ প্রকাশ কোথা মানবের বাক্যে, কোথা সেই অনন্ত আভাস, কোথা সেই অর্থভেদী অভ্ৰভেদী সংগীত-উচ্ছ্বাস, আত্মবিদারণকারী মর্মাস্তিক মহান নিশ্বাস ? মানবের জীর্ণ বাক্যে মোর ছন্দ দিবে নব স্বর, অর্থের বন্ধন হতে নিয়ে তারে যাবে কিছু দূর ভাবের স্বাধীন লোকে, পক্ষবান অশ্বরাজ-সম উদ্দাম-সুন্দর-গতি,— সে আশ্বাসে ভাসে চিত্ত মম। সুর্যেরে বহিয়া যথা ধায় বেগে দিব্য অগ্নিতরী মহাব্যোমনীলসিন্ধু প্রতিদিন পারাপার করি, ছন্দ সেই অগ্নিসম বাক্যেরে করিব সমর্পণ— যাবে চলি মর্তসীমা অবাধে করিয়া সস্তরণ, গুরুভার পৃথিবীরে টানিয়া লইবে উৰ্ব্বপানে, কথারে ভাবের স্বর্গে, মানবেরে দেবপীঠস্থানে । মহাম্বুধি ষেইমতো ধ্বনিহীন স্তন্ধ ধরণীরে বাধিয়াছে চতুর্দিকে অন্তহীন নৃত্যগীতে ঘিরে তেমনি আমার ছন্দ, ভাষারে ঘেরিয়া আলিঙ্গনে গাবে যুগে যুগান্তরে সরল গম্ভীর কলম্বনে দিক হতে দিগন্তরে মহামানবের স্তবগান,— ক্ষণস্থায়ী নরজন্মে মহং মর্যাদা করি দান। হে দেবর্ষি, দেবদূত, নিবেদিয়ে পিতামহ-পায়ে স্বৰ্গ হতে যাহা এল স্বর্গে তাহা নিয়ো ন ফিরায়ে । দেবতার স্তবগীতে দেবেরে মানব করি আনে, তুলিব দেবতা করি মানুষেরে মোর ছন্দে গানে। ভগবন, ত্রিভুবন তোমাদের প্রত্যক্ষে বিরাজে— কহ মোরে কার নাম অমর বীণার ছন্দে বাজে । কহ মোরে বীর্ষ কার ক্ষমারে করে না অতিক্রম, কাহার চরিত্র ঘেরি স্বকঠিন ধর্মের নিয়ম ধরেছে সুন্দর কাস্তি মাণিক্যের অঙ্গদের মতো, মহৈশ্বর্ষে আছে নম্র, মহাদৈন্তে কে হয় নি মত,