পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (পঞ্চম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১৭৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

N (ty কুন্তী । কর্ণ। রবীন্দ্র-রচনাবলী সত্য হোক, স্বপ্ন হোক, এসে স্নেহময়ী তোমার দক্ষিণ হস্ত ললাটে চিবুকে রাখো ক্ষণকাল। শুনিয়াছি লোকমুখে জননীর পরিত্যক্ত আমি । কতবার হেরেছি নিশীথস্বপ্নে, জননী আমার এসেছেন ধীরে ধীরে দেখিতে আমায়, কাদিয়া কহেছি তারে কাতর ব্যথায় ‘জননী, গুণ্ঠন খোলো দেখি তব মুখ’— অমনি মিলায় মূর্তি তৃষার্ত উংস্থক স্বপনেরে ছিন্ন করি। সেই স্বপ্ন আজি এসেছে কি পাণ্ডবজননীরূপে সাজি সন্ধ্যাকালে, রণক্ষেত্রে, ভাগীরথীতীরে । হেরো দেবী, পরপারে পাণ্ডবশিবিরে জলিয়াছে দীপালোক, এ পারে অদূরে কৌরবের মন্দুরায় লক্ষ অশ্বথুরে খর শব্দ উঠিছে বাজিয়া । কালি প্রাতে আরম্ভ হইবে মহারণ। আজ রাতে অৰ্জুনজননীকণ্ঠে কেন শুনিলাম আমার মাতার স্নেহস্বর । মোর নাম তার মুখে কেন হেন মধুর সংগীতে উঠিল বাজিয়া— চিত্ত মোর আচম্বিতে পঞ্চপাণ্ডবের পানে 'ভাই' বলে ধায় । তবে চলে আয় বৎস, তবে চলে আয় । যাব মাতঃ, চলে যাব, কিছু শুধাব না— না করি সংশয় কিছু না করি ভাবনা । দেবী, তুমি মোর মাতা ! তোমার আহবানে অন্তরাত্মা জাগিয়াছে— নাহি বাজে কানে যুদ্ধভেরী, জয়শম্ব— মিথ্যা মনে হয় রণহিংসা, বীরখ্যাতি, জয়পরাজয় । কোথা যাব, লয়ে চলো ।