পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (পঞ্চম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২৯৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নৌকাডুবি ՀԳ> ছুটিমাত্র মেয়ে। বড়ো মেয়ে তো শ্বশুরবাড়ি গেছে। ছোটোটিকে প্রাণ ধরিয়া বিদায় দিতে না পারিয়া চক্রবর্তী একটি নিঃস্ব জামাই বাছিয়া আনিলেন এবং সাহেব স্ববাকে ধরিয়া এইখানেই তাহার একটা কাজ জুটাইয়া দিলেন। বিপিন ইহাদের বাড়িতেই থাকে। কথা কহিতে কহিতে হঠাৎ এক সময় শৈল বলিল, “তুমি একটু বোসো ভাই, আমি এখনি আসিতেছি।” পরক্ষণেই একটু হাসিয়া কারণ দর্শাইয়া কহিল, উনি স্নান করিয়া ভিতরে আসিয়াছেন, খাইয়া আপিসে যাইবেন ।” কমলা সরল বিস্ময়ের সহিত প্রশ্ন করিল, “তিনি আসিয়াছেন তুমি কেমন করিয়া জানিতে পারিলে ?” க் শৈলজা। আর ঠাট্টা করিতে হইবে না। সকলেই যেমন করিয়া জানিতে পারে আমিও তেমনি করিয়া জানি। তুমি নাকি তোমার কর্তাটির পায়ের শব্দ চেন ब ? এই বলিয়া হাসিয়া কমলার চিবুক ধরিয়া একটু নাড়া দিয়া আঁচলে-বদ্ধ চাবির গোছা ঝনাং করিয়া পিঠের উপর ফেলিয়া মেয়ে কোলে লইয়া শৈলজা চলিয়া গেল। পদশব্দের ভাষা যে এতই সহজ তাহা কমলা আজও জানিতে পারে নাই। সে চুপ করিয়া বসিয়া জানলার বাহিরে চোখ রাখিয়া তাই ভাবিতে লাগিল। জানলার বাহিরে একটা পেয়ারী-গাছে ডাল ছাইয়া পেয়ারার ফুল ধরিয়াছে, সেই-সমস্ত ফুলের কেশরের মধ্যে মৌমাছির দল তখন লুটোপুটি করিতেছিল। ৩২ একটু ফাক জায়গায় গঙ্গার ধারে একটা আলাদা বাড়ি লইবার চেষ্টা হইতেছে। রমেশ, গাজিপুর-আদালতে বিধি অনুসারে প্রবেশ লাভ করিবার জন্ত ও জিনিসপত্র জানিতে এক বার কলিকাতায় যাইতে হইবে স্থির করিয়াছে, কিন্তু কলিকাতায় যাইতে তাহার সাহস হইতেছে না । কলিকাতার একটা বিশেষ গলির চিত্ৰ মনে উঠিলেই রমেশের বুকের ভিতরটা এখনো যেন কিসে চাপিয়া ধরে। এখনো জাল ছেড়ে নাই, অথচ কমলার সহিত স্বামিস্ত্রীর সম্বন্ধ সম্পূর্ণভাবে স্বীকার করিয়া লইতে বিলম্ব করিলে আর চলে না। এই-সমস্ত দ্বিধায় কলিকাতায় যাত্রায় দিন निझांझेब्रा यांहेरङ लांब्रिज । কমলা চক্রবর্তীর অন্তঃপুরেই থাকে। এ বাংলায় ঘর নিতান্ত কম বলিয়া