পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (পঞ্চম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩৬২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নৌকাডুবি WoSWO আছে এমন লক্ষণ নাই। তবু সেই স্থখন-বেহারাটা হয়তে শূন্ত বাড়ি আগলাইতেছে মনে করিয়া রমেশ বেহারাকে ডাকিয়া দ্বারে বারকতক আঘাত করিল। কেহ সাড়া দিল না। প্রতিবেশী চন্দ্রমোহন তাহার ঘরের বাহিরে বসিয়া তামাক খাইতেছিল ; সে কহিল, “কে ও । রমেশবাবু নাকি। ভাল আছেন তো ? এ বাড়িতে অন্নদাবাবুরা তো এখন কেহ নাই।” রমেশ । তাহারা কোথায় গেছেন জানেন ? চন্দ্র। সে খবর তো বলিতে পারি না, পশ্চিমে গেছেন এই জানি । রমেশ । কে কে গেছেন মশায় ? চন্দ্র । অন্নদাবাবু আর র্তার মেয়ে । রমেশ । ঠিক জানেন, র্তাহীদের সঙ্গে আর কেহ যান নাই ? চন্দ্র। ঠিক জানি বৈকি। যাইবার সময়ও আমার সঙ্গে দেখা হইয়াছে। তখন রমেশ ধৈর্যরক্ষায় অক্ষম হইয়া কহিল, “আমি একজনের কাছে খবর পাইয়াছি, নলিনবাবু বলিয়া একটি বাবু র্তাহীদের সঙ্গে গেছেন।” চন্দ্র। ভুল খবর পাইয়াছেন। নলিনবাবু আপনার ওই বাসাটাতেই দিন-কয়েক ছিলেন। ইহার যাত্রা করিবার দিন-দুইচার পূর্বেই তিনি কাশীতে গেছেন। রমেশ তখন এই নলিনবাবুটির বিবরণ প্রশ্ন করিয়া করিয়া চন্দ্রমোহনের কাছ হইতে বাহির করিল। ইহার নাম নলিনাক্ষ চট্টোপাধ্যায়। শোনা গেছে, পূর্বে রংপুরে ডাক্তারি করিতেন, এখন মাকে লইয়া কাশীতেই আছেন। রমেশ কিছুক্ষণ স্তন্ধ হইয়া রহিল। জিজ্ঞাসা করিল, “যোগেন এখন কোথায় আছে বলিতে পারেন ?” চন্দ্রমোহন খবর দিল, যোগেন্দ্র ময়মনসিঙের একটি জমিদারের স্থাপিত হাই-স্কুলের হেডমাস্টার-পদে নিযুক্ত হইয়া বিশাইপুরে গিয়াছে। চন্দ্রমোহন জিজ্ঞাসা করিল, “রমেশবাবু, আপনাকে তো অনেক দিন দেখি নাই ; আপনি এতকাল কোথায় ছিলেন ?” রমেশ আর গোপন করিবার কারণ দেখিল না ; সে কহিল, "প্র্যাকটিস করিতে গাজিপুরে গিয়াছিলাম।” চন্দ্র। এখন তবে কি সেইখানেই থাকা হইবে ? রমেশ । না, সেখানে আমার থাকা হইল না ; এখন কোথায় যাইব ঠিক করি बांहै । রমেশ চলিয়া যাইবার অনতিকাল পরেই অক্ষয় জাসিয়া উপস্থিত হইল। যোগেন্দ্র