পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (পঞ্চম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২৩ চৈত্র ১৩০২ চৈতালি পুটু চৈত্রের মধ্যাহ্নবেলা কাটিতে না চাহে । তৃষাতুর বন্ধন্ধর দিবসের দাহে। হেনকালে শুনিলাম বাহিরে কোথায় কে ডাকিল দূর হতে “পুটুরানী, আয়” । জনশূন্ত নদীতটে তপ্ত দ্বিপ্রহরে কৌতুহল জাগি উঠে স্নেহকণ্ঠস্বরে। গ্রন্থখানি বন্ধ করি উঠিলাম ধীরে, দুয়ার করিয়া ফাক দেখিতু বাহিরে । মহিষ বৃহৎকায় কাদামাথা গায়ে স্নিগ্ধনেত্ৰে নদীতীরে রয়েছে দাড়ায়ে । যুবক নামিয়া জলে ডাকিছে তাহায় স্নান করাবার তরে, “পুটুরানী, আয় ।” হেরি সে যুবারে, হেরি পুটুরানী তারি মিশিল কৌতুকে মোর স্নিগ্ধ স্বধাবারি। হৃদয়ধর্ম হৃদয় পাষাণভেদী নিৰ্ব্বরের প্রায়, জড়জন্তু সবাপানে নামিবারে চায়। মাঝে মাঝে ভেদচিহ্ন আছে যত যার সে চাহে করিতে মগ্ন লুপ্ত একাকার । মধ্যদিনে দপ্তদেহে বাপ দিয়ে নীরে মা বলে সে ডেকে ওঠে স্নিগ্ধ তটিনীরে । যে চাদ ঘরের মাঝে হেসে দেয় উকি, সে যেন ঘরেরি মেয়ে শিশু স্বধামুখী । যে-সকল তরুলতা রচি উপবন গৃহপাশ্বে বাড়িয়াছে, তারা ভাইবোন।