পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (পঞ্চম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৪৩৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নৌকাডুবি 8Sめ র্তাহার বৃদ্ধা মা আছেন, তিনি এসব কথা জানিতে পারিলে কমলার পক্ষে কি ভালো হইবে ?” i রমেশ কহিল, “সামাজিক হিসাবে কী ফল হইবে, জানি না, কিন্তু কমলাকে যে কোনো অপরাধ স্পর্শ করে নাই, সেটা তো নলিনাক্ষের জানা চাই । কমলার যদি মৃত্যুই হইয়া থাকে, তবে নলিনাক্ষবাবু তাহার স্থতিকে তো সম্মান করিতে পারিবেন।” খুড়া কহিলেন, “আপনাদের ও সব একেলে কথা আমি কিছুই বুঝিতে পারি না— কমলা যদি মরিয়াই থাকে তবে তাহার এক রাত্রির স্বামীর কাছে তাহার স্মৃতিটাকে লইয়া টানাটানি করিবার কোনো দরকার দেখি না। ওই-যে বাড়িটা দেখিতেছেন ওই বাড়িতে আমার বাসা। কাল সকালে যদি একবার আসিতে পারেন, তবে আপনাকে সব কথা স্পষ্ট করিয়া বলিব। কিন্তু তাহার পূর্বে নলিনাক্ষবাবুর সঙ্গে দেখা করিবেন না, এই আমার অনুরোধ।” রমেশ বলিল, “আচ্ছা ।” খুড়া ফিরিয়া আসিয়া কমলাকে কহিলেন, “মা, কাল সকালে তোমাকে আমাদের বাড়িতে যাইতে হইবে । সেখানে তুমি নিজে রমেশবাবুকে বুঝাইয়া বলিবে, এই আমি স্থির করিয়াছি।” ', কমলা মাথা নিচু করিয়া বসিয়া রহিল। খুড়া কহিলেন, “আমি নিশ্চয় জানি তাহা না হইলে চলিবে না— একেলে ছেলেদের কর্তব্যবুদ্ধি সেকেলে লোকের কথায় ভোলে না । মা, মন হইতে সংকোচ দূর করিয়া ফেলো— এখন তোমার যেখানে অধিকার অন্ত লোককে আর সেখানে পদার্পণ করিতে দিবে না, এ তো তোমারই কাজ । এ সম্বন্ধে আমাদের তো তেমন জোর খাটিবে না ।” কমল তৰু মুখ নিচু করিয়া রহিল। খুড়া কহিলেন, “মা, অনেকটা পরিষ্কার হইয়া আসিয়াছে, এখন এই ছোটোখাটো জঞ্জালগুলো শেষবারের মতো ঝাটাইয়া ফেলিতে সংকোচ করিয়ো না ।” এমন-সময় পদশব্দ শুনিয়া কমলা মুখ তুলিয়াই দেখিল, দ্বারের সম্মুখে নলিনাক্ষ । একেবারে তাহার চোখের উপরেই নলিনাক্ষের দুই চোখ পড়িয়া গেল— অন্তদিন নলিনাক্ষ যেমন তাড়াতাড়ি দৃষ্টি ফিরাইয়া চলিয়া যায়, আজ যেন তেমন তাড়া করিল না। যদিও ক্ষণকালমাত্র কমলার দিকে সে চাহিয়াছিল, কিন্তু তাহার সেই ক্ষণকালের দৃষ্টি কমলার মুখ হইতে কী ষেন আদায় করিয়া লইল, অন্ত দিনের মতো অনধিকারের সংকোচে দেখিবার জিনিসটিকে প্রত্যাখ্যান করিল না . পরমুহূর্তেই শৈলজাকে ●欄ミbア 曾