পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (পঞ্চম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৫৭৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গ্রন্থপরিচয় । & دون হইয়াছে ? না সেই সূত্রেই অনন্তের সহিত পৃথিবীর বন্ধন হইয়াছে ? তাই পর্বত আকাশের দিকে চাহিয়া স্বন্দর, তাই নদী সমূত্রের দিকে চাহিয়া সুন্দর, রাত্রি দিনের দিকে চাহিয়া স্বন্দর, মকুন্তও প্রকৃতির সস্তান, সেও যদি এক দিকে চায় সেও স্বন্দর ?-سا-:gl avtج রবীন্দ্রনাথ এই মস্তব্যের প্রত্যুত্তরে লিখিয়াছিলেন— ‘স্কন্ধদবরেষু—. আপনি "রুদ্ধ গৃহ ষে ভাবে বুঝিয়াছেন আমি ঠিক সে ভাবে লিখি নাই। আপনি যাহা বলিয়াছেন সে ঠিক কথা। একের চারিদিকেই আমাদিগকে ঘুরিতে হইবে নহিলে অনেকের মধ্যে বিলুপ্ত হইয়া যাইব । কিন্তু জগতের মধ্যে আমাদের এমন এক নাই যাহা আমাদের চিরদিনের অবলম্বনীয়। প্রকৃতি ক্রমাগতই আমাদিগকে ‘এক হইতে একান্তবে লইয়া যাইতেছে— এক কাড়িয়া আর-এক দিতেছে। আমাদের শৈশবের এক যৌবনের এক নহে। যৌবনের এক’ বাধক্যের এক নহে, ইহজন্মের এক পরজন্মের এক নহে। এইরূপ শতসহস্ৰ একের মধ্য দিয়া প্রকৃতি আমাদিগকে সেই এক মহৎ একের দিকে লইয়া যাইতেছে। সেই দিকেই আমাদিগকে অগ্রসর হইতে হইবে, পথের মধ্যে বদ্ধ হইয়া থাকিতে আসি নাই । জগতের আর-সমস্ত ‘একই পথের মধ্যে মাঝে মাঝে বিশ্রাম করিবার জন্য ; বাস করিবার জন্ত নহে। রাত্রি প্রভাত হইলেই ছাড়িয়া যাইতে হইবে— পড়িয়া পড়িয়া শোক করিলে হইবে না। কিছুই থাকিতে চায় না, অথচ জামরা রাণিতে চাই, ইহাই আমাদের যত শোকদুঃখের কারণ। সকলকে যাইতে দাও, এবং তুমিও চলে— জগতের সহিত নিষ্ফল সংগ্রাম করিয়ে না। এই কথা আমরা যেন সার জানি । př শূন্ততার ভয় করিবেন না, কিছুই শূন্ত থাকিবে না। সমস্ত শূন্ত করিয়া দেয় জগতে এমন বিরহ কোথায় ! ক্ষুদ্রতর এক বৃহত্তর একের জন্ত স্থান রচনা করিয়া দেয়। হৃদয়ের পুত্তলিকাসকল ভাঙিয়া গেলে ঈশ্বর সেখানে আসিয়া অধিষ্ঠান করেন। প্রিয়তমের মৃত্যুতে জগৎ প্রিয়তম হয়। ক্ষুদ্রকে ভালোবাসিতে আরম্ভ করিয়া বৃহৎর্কে ভালোবাসিতে শিখি । জগতের কিছুরই মধ্যে আমাদের নিবৃত্তি নাই এবং সে নিবৃত্তিকামনা করা নিষ্ফল ও আমাদের পক্ষে অমঙ্গলজনক। আমাদের ভ্রম লইয়া আমরা কাদি বৈ তো নয়। যাহা যায় তাহাকে আমরা থাকে মনে করি— ষে নিজের ও সমস্ত জগতের জন্ত হইয়াছে তাহাকে আমরা আমারই জন্ত হইয়াছে মনে করি— স্বাহীকে আমরা কখনোই চিরদিন ভালোবাসিতে পারিব না তাহাকে আমরা চিরদিনের