পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (পঞ্চম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/১২০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রবীন্দ্র-রচনাবলী ছিলে রত তপস্যায় অরাপরশ্মির অন্বেষণে লোকলোেকান্তের অন্তরালে- যেথা পূর্ব ঋষিগণে বহুত্বের সিংহদ্বার উদঘাটিয়া একের সাক্ষাতে দাড়াতেন। বাক্যহীন স্তম্ভিত বিস্মিত জোড়হাতে । হে তপস্বী, ডাকো তুমি সামমন্ত্রে জলদগর্জনে, “উত্তিষ্ঠত নিবোধত !’ ডাকো শাস্ত্ৰ-অভিমানী জনে পাণ্ডিত্যের পণ্ডতর্ক হতে । সুবৃহৎ বিশ্বতলে ডাকো মূঢ় দাম্ভিকেরে । ডাক দাও তব শিষ্যদলে, একত্রে দাড়াক তারা তব হােমহুতাগ্নি ঘিরিয়া । আরবার এ ভারত আপনাতে আসুক ফিরিয়া নিষ্ঠায় শ্রদ্ধায়, ধ্যানে— বসুক সে অপ্ৰমত্তচিতে লোভহীন দ্বন্দ্বহীন শুদ্ধ শান্ত গুরুর বেদীতে । [আষাঢ় ১৩০৮] v) S আজিকে গহন কালিমা লেগেছে গগনে, ওগো, দিক-দিগন্ত ঢাকি । আজিকে আমরা কাদিয়া শুধাই সঘনে, ওগো, আমরা খাচার পাখিহৃদয়বন্ধু, শুন গো বন্ধু মোর, আজি কি আসিল প্ৰলয়রাত্রি ঘোর । চিরদিবসের আলোক গেল কি মুছিয়া । চিরদিবসের আশ্বাস গেল ঘুচিয়া ? দেবতার কৃপা আকাশের তলে কোথা কিছু নাহি বাকি ?— তোমাপানে চাই, কঁকাদিয়া শুধাই আমরা খাচার পাখি । ফাল্পনি এলে সহসা দখিনপবন হতে মাঝে মাঝে রহি রহি আসিত সুবাস সুদূরকুঞ্জভবন হতে অপূর্ব আশা বহি । হৃদয়বন্ধু, শুন গো বন্ধু মোর, কী মায়ামস্ত্রে বন্ধনদুখ নাশিয়া ঘনমসী-আঁকা লোহার শলাকা সোনার সুধায় মাখি ।-- নিখিল বিশ্ব পাইতাম প্ৰাণে আমরা খাচার পাখি । আজি দেখো ওই পূর্ব-আচলে চাহিয়া, হােথা কিছুই না যায় দেখা আজি কোনো দিকে তিমিরপ্ৰান্ত দাহিয়া, হােথা পড়ে নি সোনার রেখা ।