পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (পঞ্চম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/২০৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

(RR୩ ܠ brܬ ভেসে গেলেম আপন-মনে, ভেসে গেলেম পারে, ফিরে এলেম ভেসেসীতার দিয়ে চলে গেলেম, চলে এলেম যেন সকল-হারা দেশে । ওগো বোবা, ওগো কালো, স্তব্ধ সুগভীর তুমি নিবিড় নিশীথ-রাত্রি বন্দী হয়ে আছ— মাটির পিঞ্জীর । প্ৰাণের নিকেতন, হঠাৎ থেমে তোমার পরে নত হয়ে পড়ে দেখিছে দপণ । নামি তোমার মাঝেএ কোন অশ্রুভরা গীতি ছলছলিয়ে উঠে কানের কাছে বাজে । ছায়া-নিচোল দিয়ে ঢাকা মরণ-ভরা তব বুকের আলিঙ্গন আমায় নিল কেড়ে নিল সকল বাধা হতে, কাড়িল মোর মন । শিউলি-শাখে কোকিল ডাকে করুণ কাকলিতে ব্লকান্ত আশার ডাক । স্নান ধূসর আকাশ দিয়ে দূরে কোথায় নীড়ে উড়ে গেল কাক । মমরিয়া মমরিয়া বাতাস গেল মরে বেণুবনের তলে, আকাশ যেন ঘনিয়ে এল ঘুমঘোরের মতো দিঘির কালো জলে । সন্ধ্যাবেলার প্রথম তারা উঠল গাছের আড়ে, বাজল দূরে শাখ । র্যন্ত্রবিহীন অন্ধকারে পাখার শব্দ মেলে গেল। বকের বঁাক । পথে কেবল জোনাক জ্বলে, নাইকো কোনো আলো এলেম যাবে ফিরেদিন ফুরালো, রাত্রি এল, কাটল মাঝের বেলা দিঘির কালো নীরে । শান্তিনিকেতন ২৭। বৈশাখ ১৩১৩