পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (পঞ্চম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৩৩৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

दूg &98 ዓ হল তব যাত্রা সারা, মোছ মোছ অশ্রদ্ধারা, লজ্জাভয় গেল ঝরি, ঘুচিল রে অভিমান ৷ ঠাকুরদার প্রবেশ ঠাকুরদা। ভোর হল দিদি, ভোর হল। সুদৰ্শনা। তোমাদের আশীর্বাদে পৌঁচেছি ঠাকুরদা, পীেচেছি। ঠাকুরদা। কিন্তু আমাদের রাজার রকম দেখেছি ? রথ নেই, বাদ্য নেই, সমারোহ নেই। সুদৰ্শনা। বল কী, সমারোহ নেই ? ঐ-যে আকাশ একেবারে রাঙা, ফুলগন্ধের অভ্যর্থনায় বাতাস একেবারে পরিপূর্ণ। ঠাকুরদা। তা হােক। আমাদের রাজা যত নিষ্ঠুর হােক, আমরা তো তেমন কঠিন হতে পারিনিআমাদের যে ব্যথা লাগে । এই দীনবেশে তুমি রাজভবনে যােচ্ছ, এ কি আমরা সহ্য করতে পারি। একটু দাড়াও, আমি ছুটে গিয়ে তোমার রানীর বেশটা নিয়ে আসি । সুদৰ্শন । না না না ! সে রানীর বেশ তিনি আমাকে চিরদিনের মতো ছাড়িয়েছেন, সবার সামনে আমাকে দাসীর বেশ পরিয়েছেন- বেঁচেছি, বেঁচেছি। আমি আজ তার দাসী- যে-কেউ তার আছে, আমি আজ সকলের নীচে । ঠাকুরদা । শত্রুপক্ষ তোমার এ দশা দেখে পরিহাস করবে। সেইটো আমাদের অসহ্য হয় । অভিসারে সেই ধুলোই যে, আমার অঙ্গরাগ । ঠাকুরদা । এর উপরে আর কথা নেই। এখন আমাদের বসন্ত-উৎসবের শেষ খেলাটাই চলুকফুলের রেণু এখন থাক, দক্ষিনে হাওয়ায় এবার ধুলো উড়িয়ে দিক | সকলে মিলে আজ ধূসর হয়ে প্রভুর কাছে যাব । গিয়ে দেখব। তার গায়েও ধুলো মাখা । তাকে বুঝি কেউ ছাড়ে মনে করছি ? যে পায়, তার গায়ে মুঠো মুঠো ধুলো দেয় যে ! সে ধুলো সে ঝেড়েও ফেলে না। কাঞ্চী । ঠাকুরদা, তোমাদের এই ধুলোর খেলায় আমাকে ভুলো না । আমার এই রাজবেশটািকে এমনি মাটি করে নিয়ে যেতে হবে যাতে একে আর চেনা না যায় । ঠাকুরদা। সে আর দেরি হবে না ভাই ! যেখানে নেবে এসেছ এখানে যত তোমার মিথ্যে মান সব ঘুচে গেছে, এখন দেখতে দেখতে রঙ ফিরে যাবে। আর, এই আমাদের রানীকে দেখো- ও নিজের উপর ভারি রাগ করেছিল- মনে করেছিল, গয়না ফেলে দিয়ে নিজের ভুবনমোহন রূপকে লাঞ্ছনা দেবে— কিন্তু, সে রূপ অপমানের আঘাতে আরো ফুটে পড়েছে, সে যেন কোথাও আর কিছু ঢাকা নেই । আমাদের রাজাটির নিজের নাকি রূপের সম্পর্ক নেই, তাই তো এই বিচিত্র রূপ সে এত ভালোবাসে, এই রূপই তো তার বক্ষের অলংকার। সেই রূপ আপনার গর্বের আবরণ ঘুচিয়ে দিয়েছে। আজ আমার রাজার ঘরে কী সুরে যে এতক্ষণে বীণা বেজে উঠেছে তাই শোনবার জন্যে প্রাণটা ছটফট করছে। " সুরঙ্গমা। ঐ-যে সূর্য উঠল। SO उदा: घठ्ठ সুদৰ্শনা। প্ৰভু, যে আদর কেড়ে নিয়েছ। সে আব্দর আর ফিরিয়ে দিয়ে না। আমি তোমার চরণের দাসী, আমাকে সেবার অধিকার দাও । রাজা । আমাকে সইতে পারবে ?