ዓX©br রবীন্দ্ৰ-প্রচনাবলী আমাদের পক্ষে মৃত্যু। মহাত্মা দয়ানন্দ স্বামীর প্রতিষ্ঠিত আৰ্যসমাজ ক্ষুদ্র হিন্দুয়ানিকে আর্য-উদারতার দিকে প্রসারিত করিবার যে প্ৰয়াস পাইতেছেন এবং উত্তরপশ্চিমাঞ্চলে তাহা যেরূপ পবিব্যাপ্ত হইতেছে তাহাতে আমরা মহৎ-আশার কারণ দেখিতেছি । উক্ত সমাজের, অন্তত সমাজস্থাপয়িতা দয়ানন্দ স্বামীর প্রচারিত মতের প্রধান গুণ এই যে, তাহা দেশীয়তাকেও লঙ্ঘন করে নাই, অথচ মনুষ্যত্বকেও খর্ব করে নাই। তাহা ভাবে ভারতবর্ষীয়, অথচ মতে সার্বভৌমিক। তাহা হৃদয়ের বন্ধনে আপনাকে প্রাচীন স্বজাতির সহিত বাধিয়াছে, অথচ উন্মুক্ত যুক্তি এবং সত্যের দ্বারা সর্বকালের সহিত সম্পর্ক স্থাপন করিয়াছে । এই সমাজের সমস্ত লক্ষণগুলি পর্যালোচনা করিয়া আমরা আশা করিতেছি যে, ইহা ভারতে আর-একটি অভিনব সম্প্রদায় রূপে নূতন বিচ্ছেদ আনয়ন না করিয়া সমস্ত সম্প্রদায়কে ক্রমশ এক করিতে পরিবে । বারান্তরে আর্যসমাজ সম্বন্ধে বিস্তারিত আলোচনা করিবার ইচ্ছা বহিল। ভিন্ন জাতির সহিত সংস্রব ইংরাজের যেমন ঘটিয়াছে এমন আর-{োনো যুরোপীয় জাতির ঘটে নাই । কিন্তু ইংরাজের পরজাতিবিদ্বেষ সমান সুতীব্র রহিয়াছে। ইহা ! [হাদের জাতীয়তার অত্যগ্ৰ বিকাশের পরিচয়স্থল । বিদেশ হইতে আগত বিজাতি ইংলন্ডে অথবা ইংরাজ-উপনিবেশে বাসগ্রহণে উদ্যত হইলে ইংরাজের মনে যে বিরোধভাবের উদ্রেক করে স্পেক্টেটর সেই সম্বন্ধে আলোচনা উত্থাপিত করিয়াছেন । কিন্তু পরদেশে গিয়া তাদেশীয়দের প্রতি ইংরাজের উদ্ধত বিমুখ ভাবও সুবিখ্যাত । এমন-কি, যুরোপের মহাদেশবাসীগণ সম্বন্ধেও ইহার অন্যথা হয় না । আহারবিহারে আচারে ও ভাবে দ্বীপবাসী ইংরাজের সহিত মহাদেশ হাসী যুরোপীয়ের স্বল্পই প্রভেদ, কিন্তু সেই প্রভেদগুলিও সাধারণ ইংরাজের মনে অবজ্ঞা এবং প্রতিকৃtা ভাব আনয়ন করে । তাহাদের জাতিসংস্কার এত দৃঢ় এবং সুকঠিন । ইহার উপরে যখন পরজাতির সহিত স্বার্থের সংঘর্ষ জন্মিবাণ লেশমাত্র সম্ভাবনা ঘটে তখন ইংরাজের অসহিষ্ণুতা যে অত্যন্ত বর্ধিত হইবে ইহা স্বাভাবিক ', ইংলন্ড-প্রবাসী জার্মান ইতালীয় ও পোলীয় ইহুদিগণের প্রতি ইংরেজি অধিবাসীদের মনে যে শত্রুতার উদ্রেক করে তাহা যে কেবলমাত্ৰ সুমহৎ জাতীয়ভাবের প্ররোচনায় তাহা বলিতে পারি না, উহার মধ্যে স্বার্থহানির আশঙ্কাই প্রবলতর। একে বিজাতীয়, তাহার উপরে স্বার্থের সংঘর্ষ— এই ৰূপ স্থলে খৃস্টীয় ধর্মনীতি এবং ন্যায়-অন্যায়ের উচ্চতর আদর্শ টেকাই কঠিন হয় । ইহাতে যে অৱতা আনয়ন করে, উনবিংশ শতাব্দীর সভ্যতারশ্মি তাহা ভেদ করিয়া উঠিতে পারে না । - অল্পদিন হইল। ভূতপূর্ব ভারত-স্টেট-সেক্রেটারি সার হেন? ফাউলার পার্লামেন্টে বলিয়াছিলেন, 'ওআরেন হেস্টিংস এবং লর্ড ক্লাইভেব কাৰ্যবিধি যদি পাের্লামেন্টের বিচারাধীন হইত। তবে সম্ভবত ভারতসাম্রাজ্য আমরা পাইতাম না।’ তাহার এই বাক্যে পার্লামেন্টে খুব-একটা উৎসাহসূচক করতালি *छेिशांछिल । এ কথাটার কি এই অর্থ যে, যেখানে স্বাৰ্থ স্বজাতির এবং দুঃখ পরজাতির সেখানে অত বিচার-আচার করিলে চলে না ? পার্লামেন্টের মতো প্রকাশ্য বৃহৎ সভায় এ কথার উচ্ছসিত অনুমােদন কি ধর্মনীিতির মূলসূত্রের প্রতি সুস্পষ্ট অবজ্ঞা-প্রদর্শন নািহ। ধর্মনীতির প্রতি এই অবজ্ঞা পরজাতির প্রতি সুগভীর "বিজ্ঞা হইতেই প্রসূত। ক্লাইভ ও হেস্টিংস যাহাদের প্রতি প্রতারণা মিথ্যাচার ও নিদারুণ উপদ্রব কটিয়াছিলেন তাহারা অনাত্মীয়, তাহারা কেহই
