পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (প্রথম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অবতরণিকা 盗 هلم لا জ্যোতিদাদা এক গুপ্তসভা স্থাপন করেছেন, একটি পোড়ো বাড়িতে তার অধিবেশন, ঋগ্‌বেদের পুথি, মড়ার মাথার খুলি আর খোলা তুলোয়ার নিয়ে তার অনুষ্ঠান, রাজনারায়ণ বসু তার পুরোহিত ; সেখানে আমরা ভারত-উদ্ধারের দীক্ষা পেলেম । o, এই সকল আকাঙ্ক্ষা উৎসাহ উদযোগ এর কিছুই ঠেলাঠেলি ভিড়ের মধ্যে নয়। শান্ত অবকাশের ভিতর দিয়ে ধীরে ধীরে এর প্রভাব আমাদের অন্তরে প্রবেশ করেছিল । রাজসরকারের কোতোয়াল হয় তখন সতর্ক ছিল না, নয় উদাসীন ছিল, তারা সভার সভ্যদের মাথার খুলি ভঙ্গ বা রসভঙ্গ করতে আসেনি। l কলকাতা শহরের বক্ষ তখন পাথরে বাধানো হয়নি, অনেকখানি কাচ ছিল। তেল-কলের ধোয়ায় আকাশের মুখে তখনও কালি পড়েনি। ইমারত-অরণ্যের ফাকায় ফাকায় পুকুরের জলের উপর সূর্যের আলো ঝিকিয়ে যেত, বিকেলবেলায় অশথের ছায়া দীর্ঘতর হয়ে পড়ত, হাওয়ায় তুলত নারকেল গাছের পত্র-ঝলির, বাধা নালা বেয়ে গঙ্গার জল ঝরনার মতো ঝরে পড়ত আমাদের দক্ষিণ বাগানের পুকুরে, মাঝে মাঝে গলি থেকে পালকি-বেহারার হাইহুই শব্দ আসত কানে, আর বড়ে রাস্ত থেকে সহিসের হেইও হাক । সন্ধ্যাবেলায় জ্বলত তেলের প্রদীপ, তারই ক্ষীণ আলোয় মাছর পেতে বুড়ী দাসীর কাছে শুনতুম রূপকথা । এই নিস্তব্ধপ্রায় জগতের মধ্যে আমি ছিলুম এক কোণের মানুষ, লাজুক, নীরব, নিশ্চঞ্চল । ላኹ আরও একটা কারণে আমাকে খাপছাড়া করেছিল। আমি ইস্কুলপালানো ছেলে, পরীক্ষা দিইনি, পাস করিনি, মাস্টার আমার ভাবী কালের সম্বন্ধে হতাশ্বাস। ইস্কুলঘরের বাইরে যে অবকাশটা বাধাহীন, সেইখানে আমার মন হাঘরেদের মতো বেরিয়ে পড়েছিল। 虹 ইতিপূর্বেই কোন একটা ভরসা পেয়ে হঠাৎ আবিষ্কার করেছিলুম, লোক যাকে বলে কবিতা সেই ছন্দ-মেলানো মিল-করা ছড়াগুলো সাধারণ কলম দিয়েই সাধারণ লোকে লিখে থাকে । তখন দিনও