পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (প্রথম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২২০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

SW38 রবীন্দ্র-রচনাবল জগৎ-কুয়াশা মাঝে ছিমু মগ্ন হয়ে, অদৃশ্বে আঁধারে বসি মৃতীত্ব কিরণে ছিড়িয়া ফেলেছি সেই মায়া-আবরণ, জগং চরণতলে গিয়াছে মিলায়ে— সহসা প্রকাশ পাই দীপ্ত মহিমায়। . বসে বসে চন্দ্র সুর্য দিয়েছি নিবায়ে, একে একে ভাঙিয়াছি বিশ্বের সীমানা, দৃপ্ত শব্দ স্বাদ গন্ধ গিয়েছে ছুটিয়া, গেছে ভেঙে আশা ভয় মায়ার কুহক। কোটি কোটি যুগব্যাপী সাধনার পরে, যুগাস্তের অবসানে, প্রলয়-সলিলে স্বষ্টির মলিন রেখা মুছি শূন্ত হতে— ছায়াহীন নিষ্কলঙ্ক অনন্ত পুরিয়া যে আনন্দে মহাদেব করেন বিরাজ, পেয়েছি পেয়েছি সেই আনন্দ-আভাস । জগতের মহাশিলা বক্ষে চাপাইয়া কে আমারে কারাগারে করেছিল রোধ, পলে পলে যুঝি যুঝি তিল তিল করি জগদল সে পাষাণ ফেলেছি সরায়ে, হৃদয় হয়েছে লঘু স্বাধীন স্ববশ। কী কষ্ট না দিয়েছিল রাক্ষসী প্রকৃতি অসহায় ছিদ্ম যবে তোর মায়ার্কাদে । আমার হৃদয়-রাজ্যে করিয়া প্রবেশ আমারি হৃদয় তুই করিলি বিদ্রোহী। বিরাম বিশ্রাম নাই দিবস-রজনী সংগ্রাম বহিয়া বক্ষে বেড়াতেম ভ্ৰমি । কানেতে বাজিত সদা প্রাণের বিলাপ, হৃদয়ের রক্তপাতে বিশ্ব রক্তময়, রাঙা হয়ে উঠেছিল দিবসের আঁখি ।