পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (প্রথম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অবতরণিকা । هلم إلا যতটা ক্লাস্তি ততটা সফলতা থাকে না, যতটা ক্ষয় ততটা পূরণ হয় না । অতএব তখন থেকে স্বতঃপ্রবৃত্ত হয়ে তাকে সেই সৰ্বকালের মোহানার ফুিক যাত্রা করতে হবে যেখানে কাল স্তব্ধ। গতির সাধনা শেষ করে তখন স্থিতির সাধনা ৷ . o | মমু যে মেয়াদ ঠিক করে দিয়েছেন এখন সেটাকে ঘড়ি ধরে খাটানো প্রায় অসাধ্য। মনুর যুগে নিশ্চয়ই জীবনে এত দায় ছিল না, তার গ্রস্থি ছিল কম। এখন শিক্ষা বল, কর্ম বল, এমন কি আমোদপ্রমোদ খেলাধুলা, সমস্তই বহুব্যাপক। তখনকার সম্রাটেরও রথ যত বড়ে যত জমকালো হোক, এখনকার রেলগাড়ির মতো তাতে বহু গাড়ির এমন দ্বন্দ্বসমাস ছিল না। এই গাড়ির মাল খালাস করতে বেশ একটু সময় লাগে। পাচটায় আপিসে ছুটি শাস্ত্রনির্দিষ্ট বটে, কিন্তু খাতাপত্র বন্ধ করে দীর্ঘনিশ্বাস ফেলে বাড়িমুখে হবার আগেই বাতি জ্বালতে হয়। আমাদের সেই দশা । তাই পঞ্চাশের মেয়াদ বাড়িয়ে না নিলে ছুটি মঞ্জুর অসম্ভব। কিন্তু সত্তরের কোঠায় পড়লে আর ওজর চলে না। বাইরের লক্ষণে বুঝতে পারছি আমার সময় চলল আমাকে ছাড়িয়ে—কম করে ধরলেও অন্তত দশ বছর আগেকার তারিখে আমি বসে আছি। দূরের নক্ষত্রের আলোর মতে, অর্থাৎ সে যখনকার সে তখনকার নয় । তবু একেবারে থামবার আগে চলার ঝোকে অতীত কালের খানিকট ধাক্কা এসে পড়ে বর্তমানের উপরে। গান সমস্তটাই শমে এসে পৌছলে তার সমাপ্তি ; তবু আরও কিছুক্ষণ ফরমাশ চলে পালটিয়ে গাবার জন্তে । সেটা অতীতেরই পুনরাবৃত্তি। এর পরে বড়োজোর দুটো-একটা তান লাগানো চলে, কিন্তু চুপ করে গেলেও লোকসান নেই। পুনরাবৃত্তিকে দীর্ঘকাল তাজা রাখবার চেষ্টাও যা আর কইমাছটাকে ডাঙায় তুলে মাসখানেক বাচিয়ে রাখবার চেষ্টাও তাই । এই মাছটার সঙ্গে কবির তুলনা আরও একটু এগিয়ে নেওয়া যাক । মাছ যতক্ষণ জলে আছে ওকে কিছু কিছু খোরাক জোগানো সৎকর্ম,