পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (প্রথম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২৫২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রবীন্দ্র-রচনাবলী দু-দিনেতে জীর্ণ হবে এ ক্ষুদ্র তরণী, আশ্রয়ের সাথে কোথ মজিবে পাথারে । আমি তো পেয়েছি কুল অটল পর্বতে, নিত্য যাহা তারি মাঝে করিতেছি বাস । আবার কেন রে ছোথা সস্তরণ-সাধ । ওই অশ্র-সাগরের তরঙ্গ-হিল্লোলে আবার কি দিবানিশি উঠিবি পড়িবি ! (চক্ষু মুদিয়া) হৃদয় রে শাস্ত হও, যাক সব দূরে। যাক দূরে, যাক চলে মায়া-মরীচিকা । এস এস অন্ধকার, প্রলয়-সমুদ্রে তপ্ত দীপ্ত দগ্ধ প্রাণ দাও ডুবাইয়া । অকুল স্তব্ধতা এস চারি দিকে ঘিরে, কোলাহলে কর্ণ মোর হয়েছে বধির । গেল, সব ডুবে গেল, হুইল বিলীন, হৃদয়ের অগ্নিজালা সব নিবে গেল । বালিকার প্রবেশ বালিকা। পিতা, পিতা, কোথা তুমি পিতা। সন্ন্যাসী । ( চমকিয়া ) কে রে তুই ! চিনি নে, চিনি নে তোরে, কোথা হতে এলি ! বালিকা। আমি, পিতা, চাও পিতা, দেখো পিতা, আমি ! সন্ন্যাসী । চিনি নে, চিনি নে তোরে, ফিরে যা, ফিরে যা । আমি কারো কেহ নই আমি যে স্বাধীন। বালিকা । (পায়ে পড়িয়া) আমারে যেয়ো না ফেলে, আমি নিরাশ্রয় ! শুধায়ে শুধায়ে সবে তোমারে খুজিয়া বহু দূর হতে পিতা, এসেছি যে আমি । সন্ন্যাসী । ( সহসা ফিরিয়া আসিয়া, বুকে টানিয়া ) আয় বাছা, বুকে আয়, ঢালু অশ্রধারা, ভেঙে যাক এ পাষাণ তোর অশ্রস্রোতে, আর তোরে ফেলে আমি যাব না বালিকা,