পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (প্রথম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অবতরণিকা Sw/e স্বভাবকেই চাঞ্চল্যে সার্থক করতে হয় ফুলকে । সে অশাস্ত, বাইরের দিকেই তার বর্ণগন্ধের নিত্য উদ্যম। ফলের কাজ অস্তরে, তার স্বভাবের প্লুয়োজন অপ্ৰগলভ শান্তি । শাখা থেকে মুক্তির জন্তেই তার সাধনা— সেই মুক্তি নিজেরই আন্তরিক পরিণতির যোগে । আমার জীবনে আজ সেই ফলেরই ঋতু এসেছে যে-ফল আশু বৃন্তচু্যতির অপেক্ষা করে। এই ঋতুটির সুযোগ সম্পূর্ণ গ্রহণ করতে হলে বাহিরের সঙ্গে অন্তরের শান্তি স্থাপন চাই । সেই শান্তি খ্যাতি-অখ্যাতির দ্বন্দ্বের মধ্যে বিধ্বস্ত হয় । খ্যাতির কথা থাক। ওটার অনেকখানিই অবাস্তবের বাম্পে পরিস্ফীত । তার সংকোচন-প্রসারণ নিয়ে যে-মানুষ অতিমাত্র ক্ষুব্ধ হতে থাকে সে অভিশপ্ত। ভাগ্যের পরম দান প্রীতি, কবির পক্ষে শ্রেষ্ঠ পুরস্কার তাই। যে মানুষ কাজ দিয়ে থাকে খ্যাতি দিয়ে তার বেতন শোধ চলে, আনন্দ দেওয়াই যার কাজ প্রীতি না হলে তার প্রাপ্য শোধ হয় না । অনেক কীর্তি আছে যা মানুষকেই উপকরণ করে গড়ে তোলা, যেমন রাষ্ট্র। কর্মের বল সেখানে জনসংখ্যায়—তাই সেখানে মানুষকে দলে টানা নিয়ে কেবলই দ্বন্দ্ব চলে। বিস্তারিত খ্যাতির বেড়াজাল ফেলে মানুষ ধরা নিয়ে ব্যাপার। মনে করে, লয়েড জর্জ । তার বুদ্ধিকে র্তার শক্তিকে অনেক লোকে যখন মানে তখনই তার কাজ চলে। বিশ্বাস আলগা হলে বেড়াজাল গেল ছিড়ে, মানুষ-উপকরণ পুরোপুরি জোটে না । * অপর পক্ষে কবির স্বষ্টি যদি সত্য হয়ে থাকে সেই সত্যের গৌরব সেই স্থষ্টির নিজেরই মধ্যে, দশজনের সম্মতির মধ্যে নয়। দশজনে তাকে স্বীকার করেনি এমন প্রায়ই ঘটে থাকে। তাতে বাজারদরের ক্ষতি হয়, কিন্তু সত্য মূল্যের কমতি হয় না । ফুল ফুটেছে এইটেই ফুলের চরম কথা । যার ভালো লাগল সেই তিল, ফুলের জিভ তার আপন আবির্ভাবেই। মুন্দরের অন্তরে আছে