পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (প্রথম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৪৫৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

૦૧ রবীন্দ্র-রচনাবলী স্বরম। সে কী কথা নাথ। এই সময়েই তো স্বরমাকে আবগুক। মুখের সময় আমি তোমার কী করিতে পারিতাম ! মুখের সময় সুরমা বিলাসের দ্রব্য, খেলিবার জিনিস। সকল দুঃখ অতিক্রম করিয়া আমার মনে এই মুখ জাগিতেছে যে, আমি তোমার কাজে লাগিতেছি, তোমার জন্ত দুঃখ সহিতে যে অতুল আনন্দ আছে, সেই । আনন্দ উপভোগ করিতেছি। কেবল দুঃখ এই, তোমার সমুদয় কষ্ট কেন আমি বহন করিতে পারিলাম না । 帽 যুবরাজ কিয়ংক্ষণ চুপ করিয়া থাকিয়া কহিলেন, “আমি নিজের জন্ত তেমন ভাবি না। সকলই সহিয়া গিয়াছে। কিন্তু আমার জন্য তুমি কেন অপমান সহ করিবে ? তুমি যথার্থ স্ত্রীর মতো আমার দুঃখের সময় সাত্ত্বনা দিয়াছ, প্রাস্তির সময় বিশ্রাম দিয়াছ, কিন্তু আমি স্বামীর মতো তোমাকে অপমান হইতে লজ্জ হইতে রক্ষা করিতে পারিলাম-না ! তোমার পিতা শ্ৰীপুর-রাজ আমার পিতাকে প্রধান বলিয়া না মানাতে আপনাকে যশোহরছত্রের অধীন বলিয়। স্বীকার না করাতে, পিতা তোমার প্রতি অবহেলা দেখাইয়া নিজের প্রধানত্ব বজায় রাখিতে চান । তোমাকে কেহ অপমান করিলে তিনি কানেই আনেন না। তিনি মনে করেন, তোমাকে যে পুত্রবধু করিয়াছেন, ইহাই তোমার পক্ষে যথেষ্ট । এক-একবার মনে হয়, আর পারিয়া উঠি না, সমস্ত পরিত্যাগ করিয়া তোমাকে লইয়া চলিয়া ষাই । এতদিনে হয়তো যাইতাম, তুমি কেবল আমাকে ধরিয়া রাখিয়াছ।” রাত্রি গভীর হইল। অনেকগুলি সন্ধ্যার তারা অস্ত গেল, অনেকগুলি গভীর রাত্রের তারা উদিত হইল। প্রাকার-তোরণস্থিত প্রহরীদের পদশব্দ দূর হইতে শুনা যাইতেছে। সমুদয় জগং সুষুপ্ত। নগরের সমুদয় প্রদীপ নিবিয়া গিয়াছে, গৃহদ্বার রুদ্ধ, দৈবাৎ দু-একটা শৃগাল ছাড়া একটি জনপ্রাণীও নাই। উদয়াদিত্যের শয়ন কক্ষের দ্বার রুদ্ধ ছিল । সহসা বাহির হইতে কে দুয়ারে আঘাত করিতে লাগিল। শশব্যস্ত যুবরাজ দুয়ার খুলিয়া দিলেন, “কেন বিভা ? কী হইয়াছে ? এত রাত্রে এখানে আসিয়াছ কেন ?” M পাঠকের পূর্বেই অবগত হইয়াছেন বিভা উদয়াদিত্যের ভগিনী । বিভা কহিল, *এতক্ষণে বুঝি সর্বনাশ হুইল ।” সুরমা ও উদয়াদিত্য একসঙ্গে জিজ্ঞাসা করিয়৷ উঠিলেন, “কেন, কী হইয়াছে ?” বিভা ভয়কম্পিত স্বরে চুপি চুপি কী কহিল। বলিতে বলিতে আর থাকিতে পারিল না, কাদিয়া উঠিল, কছিল, “দাদা কী হুইবে ?” উল্পোদিত্য কছিলেন, “আমি তবে চলিলাম।” বিভা বলিয়া উঠিল, “না না, তুমি याहे८ग्ना ना ।* k