বউ-ঠাকুরানীর হাট * 8:ఏ কখনো সম্ভব ?” প্রতাপাদিত্য এখনও শয়নকক্ষে যান নাই— তিনি তাহার মন্ত্ৰগৃহে বসিয়া আছেন। এক বার এক মুহূর্তের জন্ত মনে হইয়াছিল লছমন সর্বারকে ফিরিয়া ডাকিবেন। কিন্তু সে সংকল্প তৎক্ষণাৎ মন হইতে দূর হইয়া গেল। প্রতাপাদিত্য কখনো দুইবার আদেশ করেন ? যে মুখে আদেশ দেওয়া সেই মুখে আদেশ ফিরাইয়া লওয়া ? আদেশ লইয়া ছেলেখেলা করা তাহার কার্য নহে। কিন্তু বিভা ? বিভা বিধবা হইবে। রামচন্দ্র রায় যদি স্বেচ্ছাপূর্বক অগ্নিতে বাপ দিত, তাহা হইলেও তো বিতা বিধবা হইত। রামচন্দ্র রায় প্রতাপাদিত্য রায়ের রোষায়িতে স্বেচ্ছাপূর্বক বীপ দিয়াছে, তাহার অনিবাৰ্য ফলস্বরূপ বিভা বিধবা হইবে। ইহাতে প্রতাপাদিত্যের কী হাত আছে। কিন্তু এত কথাও তাহার মনে হয় নাই। মাঝে মাঝে যখনই সমস্ত ঘটনাটা উজ্জলরাপে তাহার মনে জাগিয়া উঠিতেছে তখনই তিনি একেবারে অধীর হইয়া উঠিতেছেন, ভাবিতেছেন, রাত কখন পোহাইবে ? ঠিক এমন সময় বৃদ্ধ বসস্ত রায় ব্যস্তসমস্ত হইয়া গৃহে প্রবেশ করিলেন ও আকুল ভাবে প্রতাপাদিত্যের দুই হাত ধরিয়া কছিলেন, “বাবা প্রতাপ, ইহা কি কখনো সম্ভব ?” প্রতাপাদিত্য একেবারে জলিয়া উঠিয়া বলিলেন, “কেন সম্ভব নয় ?” বসস্ত রায় কহিলেন, “ছেলেমানুষ, অপরিণামদর্শী, সে কি তোমার ক্রোধের যোগ্য পাত্র ?” 暇 প্রতাপাদিত্য বলিয়া উঠিলেন, “ছেলেমামুষ । আগুনে হাত দিলে হাত পুড়িয়া যায়, ইহা বুঝিবার বয়স তাহার হয় নাই । ছেলেমামুষ ! কোথাকার একটা লক্ষ্মীছাড়া নির্বোধ মূখ ব্রাহ্মণ, নির্বোধদের কাছে দাত দেখাইয়া যে রোজগার করিয়া খায়, তাহাকে স্ত্রীলোক সাজাইয়া আমার মহিষীর সঙ্গে বিন্দ্রপ করিবার জন্ত আনিয়াছে,— এতটা বুদ্ধি যাহার জোগাইতে পারে, তাহার ফল কী হইতে পারে, সে-বুদ্ধিটা আর তাহার মাথায় জোগাইল না । দুঃখ এই, বুদ্ধিটা যখন মাথায় জোগাইবে, তখন তাহার মাথাও তাহার শরীরে থাকিবে না।” যতই বলিতে লাগিলেন, তাহার শরীর আরো কঁাপিতে লাগিল, তাহার প্রতিজ্ঞ আরো দৃঢ় হইতে লাগিল, তাহার অধীরতা আরো বাড়িয়া উঠিল । u్న বসন্ত রায় মাথা নাড়িয়া কছিলেন, “আছা সে ছেলেমানুষ। সে কিছুই বুঝে না।” প্রতাপাদিত্যের অসহ হইয়া উঠিল, তিনি বলিলেন, “দেখো পিতৃব্যঠাকুর, যশোহরে রায়-বংশের কিলে মান-অপমান হয় সে জ্ঞান যদি তোমার থাকিবে, তবে কি ওই পাকা চুলের উপর মোগল বাদশাহের শিরোপা জড়াইয়া বেড়াইতে পার। বাদশাহের প্রসাদগবে ভূমি মাথা তুলিয়া বেড়াইতেছ বলিয়া প্রতাপাদিত্যের মাধ ; ¢ ፃ
