পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (প্রথম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/১২৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রবীন্দ্র-রচনাবলী ঘুম যেন ঘোমটা-পরা বসে আছে ঝোপে-ঝাপে। পড়ছে বসে কী যেন এক মায়া । চুপ করে হেলে সে বকুলগাছের রমণী একেলা দাড়ায়ে আছে । এলোথোলো চুলের মাঝে বিষাদমাখা সে মুখখানি, চাদের আলো পড়েছে তার 'পরে | পথের পানে চেয়ে ছিল, পথের পানেই চেয়ে আছে, পলক নাহি তিলেক কালের তরে } গেল রে কে চলে গেল, ধীরে ধীরে চলে গেল, কী কথা সে বলে গেল হায়, অতিদূর অশাথের ছায়ে মিশায়ে কে গেল রে, রমণী দাড়ায়ে জোছনায় । সীমাইনি জগতের মাঝে আশা তার হারায়ে গেল, আজি এই গভীর নিশীথে, শন্য অন্ধকারখানি মলিন মুখশ্ৰী নিয়ে দাড়িয়ে রহিল এক ভিতে । পশ্চিমের আকাশসীমায় চাদ খানি অস্তে যায় যায় { ছোটো ছোটো মেঘগুলি সাদা সাদা পাখা তুলি চলে যায় চাদের চুমো নিয়ে, আঁধার গাছের ছায় ডুবু ডুবু জোছনায স্নানমুখী রমণী দাড়িয়ে । সুখের স্মৃতি যত আলো ছিল সে চাদের সব যেন পড়েছে মুখেতে । মুখে যেন গলে পড়ে চাদ, চোখে যেন পড়িছে ঘুমিয়ে, একটি মৃণাল-করে মাথা, বাতাসটি বহে গিয়ে গায় শিহরি উঠিছে অতি সুখে |