পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (প্রথম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/১৪৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

N SO ইন্দ্র-রচনাবলী শুয়ে আছে গাছের ছায়ায় । শুধু অতি মৃদু স্বরে গুন গুন গান করে যেন সব ঘুমন্ত ভ্রমর, যেন মধু খেতে খেতে ঘুমিয়েছে কুসুমেতে মরিয়া এসেছে কণ্ঠস্বর । নীল শূন্যে ছবি আঁকা রবির-কিরণ-মাখা, সেথা যেন বাস করিতেছি । জীবনের আধখানি যেন ভুলে গেছি। আমি, কোথা যেন ফেলিয়ে এসেছি । আনমনে ধীরি ধীরি বেড়াতেছি ফিরি ফিরি ঘুমঘোর ছায়ায় ছায়ায়— কোথা যাব কোথা যাই সে কথা যে মনে নাই, ভুলে আছি মধুর মায়ায় । মধুর বাতাসে আজি যেন রে উঠিছে বাজি পরানের ঘুমন্ত বীণাটি, ভালোবাসা আজি কেন সঙ্গীহারা পাখি যেন বসিয়া গাঁহিছে। একেলাটি । কে জানে কাহারে চায়, প্ৰাণ যেন উভরায়, ডাকে কারে ‘এসো এসো’ ব’লে, কাছে কারে পেতে চায়, - সব তারে দিতে চায়, মাথাটি রাখিতে চায় কোলে । স্তব্ধ তরুতলে গিয়া পা দুখানি ছড়াইয়া নিমগন মধুময় মোহে, আনমনে গান গেয়ে দূর শূন্যপানে চেয়ে ঘুমায়ে পড়িতে চায় দোহে । দূর মরীচিকা-সম ওই বন-উপবন, ওরি মাঝে পরান উদাসী৷— বিজন বকুলতলে পল্লবের মরামরে নাম ধরে রাজাইছে বাশি । সে যেন কোথায় আছে। সুদূর বনের পাছে বসে আছে নিকুঞ্জ-আঁধারে । সাধ যায় বঁাশি করে বন হতে বানান্তরে চলে যাই আপনার মনে, কে জানে কাহার অন্বেষণে । সহসা দেখিব তারে, নিমেষেই একেবারে প্ৰাণে প্ৰাণে হইবে মিলন